বাংলাদেশে ঈদ উদযাপনের দিন বৃহস্পতিবার নির্ধারিত হলেও সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে বুধবার দেশের অনেকে জায়গায় ঈদ উদযাপন করা হয়েছে। এই তালিকায় রয়েছে শেরপুর জেলার সদর উপজেলাসহ নালিতাবাড়ী ও নকলার কয়েকটি গ্রাম। একই সঙ্গে এদিন ঈদ উদযাপন করা হয়েছে নীলফামারী জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নেও।
শেরপুর থেকে একাত্তরের নিজস্ব প্রতিনিধি জানান, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে শেরপুরের ছয়টি গ্রামে আগাম ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়েছে।
গ্রামগুলো হলো- শেরপুর সদরের উত্তর চরখারচর ও দক্ষিণ চরখারচর, নালিতাবাড়ীর নন্নী পশ্চিমপাড়া ও গোবিন্দনগর ছয়আনি পাড়া, নকলার চরকৈয়া এবং ঝিনাইগাতি উপজেলার বনগাঁও চতল।
বুধবার সকাল সাতটা থেকে ১০টার মধ্যে এসব গ্রামে পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রত্যেকটি জামায়াতে দুই থেকে আড়াইশ’ নারী-পুরুষ অংশ নেন।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে শেরপুরের এসব গ্রামের একাংশ নিজেদের আহলে হাদিসপন্থি এবং সুরেশ্বর দরবার শরিফের ভক্ত বলে দাবি করে সৌদি আরব, আফগানিস্তান ও মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে রোজা ও ঈদে নামাজ আদায় করে আসছেন।
সদরের দক্ষিণ চরখারচর এলাকার বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, অনেকদিন ধরে আমরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে নামাজ আদায় করি। শুধু যে ঈদ তা না, আমরা রোজাও রাখি সৌদির সঙ্গে মিল রেখে। এ গ্রামের অনেক মানুষ একদিন আগেই রোজা রাখে এবং ঈদ করে।
নকলা উপজেলার চরকৈয়া গ্রামের ইমাম মাওলানা সারোয়ার জাহান বলেন, নামাজের জামাত চলাকালীন প্রতিবছর আইনশৃঙ্খলাবাহিনী আমাদের নিরাপত্তা দেয়।
অপরদিকে লালমনিরহাট থেকে একাত্তরের নিজস্ব প্রতিনিধি জানান, জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় আলাদা তিনটি ইউনিয়নের চার গ্রামের প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বুধবার ঈদ উদযাপন করছে।
এদিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার মুন্সিপাড়ায় ঈদে নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজে ইমামতি করেন হাফেজ মাওলানা আব্দুল মাজেদুল ইসলাম।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার তুষভাণ্ডার, সুন্দ্রহবী, কাকিনা, চাপারহাট, চন্দ্রপুর ও মুন্সীপাড়া গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবারের মুসল্লিরা বুধবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করেছেন। তারা প্রতি বছর সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে একদিন আগে রোজা ও ঈদ করেন।
হাড়িশহরের মুন্সিপাড়ার ঈদগাহ মাঠের সভাপতি সাত্তার বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে বিগত কয়েক বছর ধরে এই এলাকার মানুষ ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহা, শবে-কদর, শবে মেরাজসহ বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করে আসছেন। এটা যার যার ব্যক্তিগত বিষয়।
একদিন আগে কেন ঈদের নামাজ, এমন প্রশ্নে একই এলাকার ইমাম মাজেদ বলেন, কোরআন থেকে জেনে শুনে এই ঈদ আমরা পালন করে আসছি। এখানে কোনো ভুল নেই। আমাদের মতে দেশের সব মানুষের ঈদ পালন করা উচিত। তাহলে ঈদের আনন্দ আরও বেড়ে যাবে।
ঈদের নামাজ আদায়ের সময় পুলিশ প্রশাসন উপস্থিত ছিল বলেও জানান স্থানীয়রা।