১৯৯৭ সালে শান্তি চুক্তি পূর্ববর্তী সময়ের মতো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা এবং নবীন সংগঠন হয়েও প্রভাবশালী জেএসএস বা ইউপিডিএফের ওপর হামলা; এসব কর্মকাণ্ডই ধীরে ধীরে সাহসী করেছে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টকে (কেএনএফ)।
কেএনএফের সশস্ত্র তৎপরতা থামাতে সেনা অভিযানের বিকল্প দেখছেন না বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, প্রয়োজনে এই গোষ্ঠীর নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক তৎপরতাকে স্বীকৃতি দিয়ে হলেও তাদের সশস্ত্র সংগ্রামের ইচ্ছে দমন করতে হবে। তবে র্যাব বা পুলিশ নয়, এ কাজে দক্ষতা কেবল সেনা বাহিনীর।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে এই গোষ্ঠীর সঙ্গে শান্তি আলোচনার আগে জঙ্গি তৎপরতা নির্মূলে দরকার সেনা অভিযান। প্রয়োজনে কেএনএফকে রাজনৈতিক স্বীকৃতি দেয়ার কথাও ভাবা যেতে পারে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, সমঝোতার জায়গায় এই মুহূর্তে নয়। তবে নিশ্চিতভাবে ভবিষ্যতে আমরা তাদের রাজনৈতিক বা অন্যভাবে ক্ষমতায় করা যেতে পারে। কিন্তু তাদের সশস্ত্র যে ব্যাপারটা, সেটা এখনই হ্রাস করতে হবে।
এই নিরাপত্তা বিশ্লেষকের মতে এটি অনেকটা যুদ্ধ পরিস্থিতি। এমন পরিস্থিতির জন্য পুলিশ ও বিজিবি নয়। বরং দরকার একটি একক নেতৃত্ব থাকা বাহিনীর। যা আছে সেনাবাহিনীর।
নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড.এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পুলিশ এবং র্যাব এই ধরনের অপরাধের জন্য প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নয়, তাদের সেই অভিজ্ঞতাও নেই। যদি সেনাবাহিনীর কমান্ডে কাউন্টার ইন্সারজেন্সি বোর্ডে ফিরে না আসে তাহলে পুলিশ এবং অন্য বাহিনী দিয়ে এটা অনেকটা দূরহ।
এমন অবস্থায় সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা, শান্তি আলোচনার পাশাপাশি কেএনএফের বিরুদ্ধে সেনা অভিযানকেই জোর দেয়ার তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
দুই এপ্রিল রাতে ও তিন এপ্রিল দুপুরে কেএনএফের সশস্ত্র সদস্যরা রুমা ও থানচিতে সোনালী ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি করে।
ব্যাংকে লুটপাট ছাড়াও অস্ত্রের মুখে সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে তারা।
থানচিতে তিনটি গাড়িতে চড়ে দিনদুপরে গুলি করতে করতে ব্যাংক ডাকাতি করতে আসে কেএনএফ সদস্যরা।
নগদ টাকাসহ লুট করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১৪টি অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ গুলি। পরে র্যারের মধ্যস্থতায় অপহৃত ব্যাংক ম্যানেজারকে উদ্ধার করা হয়।
সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা আলীকদম উপজেলায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের একটি যৌথ তল্লাশি চৌকিতেও হামলা চালায়।
পরে এ ঘটনায় আটটি মামলা দায়ের করে পুলিশ। ঘটনার পর জড়িতদের ধরতে এবং সন্ত্রাসীদের নির্মূল করতে ছয় এপ্রিল যৌথ বাহিনী সাড়াঁশি অভিযান শুরু হয়। দুই দিনের অভিযানে অভিযানে ১৮ নারীসহ ৫৬জনকে আটক করে যৌথ বাহিনী।