সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরতদের ‘মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে অবমাননাকর বক্তব্যের’ বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার ঢাকায় মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশ আহ্বান করা হয়েছে।
এদিন বিকেল ৩টায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এই ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনের আড়ালে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূলে আঘাত প্রতিহত করা এবং হত্যা, নাশকতা, অরাজকতা, অগ্নিসংযোগ প্রতিহত করার লক্ষ্যে স্বাধীনতার পক্ষের সব শ্রেণি-পেশার জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে তাদের প্রতিহত করার লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় মুক্তিযোদ্ধা শ্রমিক-কর্মচারী-পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদের উদ্যোগে বাইতুল মোকারম মসজিদের দক্ষিণ গেটে বীর মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, শ্রমিক, কর্মচারী, পেশাজীবী, বুদ্ধিজীবীসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী জনগণের এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, যতদিন শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারে আন্দোলন চলেছে, সেই দাবিতে কোন অন্যায় ছিলো না, কেউ বাধা দেয় নাই। কিন্তু পরে ‘রাজাকার’ স্লোগান দিয়ে হলে ভাঙচুর করার উস্কানি দেয় শিবির। ছাত্রলীগ তো কোটা সংস্কারের পক্ষেই ছিলো। কিন্তু পরে তাণ্ডব সৃষ্টি করে সংঘর্ষ তৈরি করে। গতকাল তার চূড়ান্ত রূপ আমরা দেখেছি। বিএনপি-জামায়েতের উস্কানিতেই এই সংঘর্ষ। এই লাশ তারাই চেয়েছিলো। তারা অস্ত্র নিয়ে বের হয়ে এসেছিলো। জনগণ কিংবা সরকার কেউই এই রক্তপাত চায় না। এখন সুতার নাটাই স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে। তাই বসে থাকার সময় নাই। তাই দল মত নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, এমন অবস্থায় উপনীত হয়েছি যেখানে বসে থাকার রাস্তা নাই। সমুচিত জবাব দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা থেকে সরাতে এই আন্দোলন। এখন কোটার নামে বিএনপি-জামায়াত কোরামের আন্দোলন চলছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, কোমলমতি ছাত্ররা যে কোটা সংস্কারের আন্দোলন করছিলো সেখানে আমাদের সহানুভূতি ছিলো। আদালতের রায়ের অপেক্ষায় আমরা ছিলাম। কিন্তু গত দুই তিনদিন ধরে যে আন্দোলন চলছে সেটা পুরোটাই সরকার বিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী আন্দোলন। সাধারণ ছাত্ররা কখনোই এমন বিধংসী হতে পারে না, আজকে সরাসরি মাঠে নেমেছে শিবির, বিএনপি-জামায়াত। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়া ছাড়া কোন পথ নেই। ছাত্রদের বিরুদ্ধে আমাদের কোন কথা নাই। কিন্তু বিএনপি জামায়েতের সরকার বিরোধী আন্দোলনকে প্রতিরোধ করতেই হবে।
সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ, মহিউদ্দিন খান আলমগীরসহ মুক্তিযোদ্ধারা বক্তব্য দেন।