হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত কর্ণফুলী টানেল দেশের জন্য এখন বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান। তিনি জানান, অপরিকল্পিত এই টানেল প্রকল্পের কারণে দেশ এখন লোকসানের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছে।
শুক্রবার নগরীর সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা জানান। এ সময় আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষের বহুল প্রতীক্ষিত কালুরঘাট নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, সেটার পাশ দিয়ে আসার সময় দেখলাম সেখানে কোনো গাড়ি নেই। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর করে তার সঙ্গে সংযোগ সড়ক হয়ে একটা ইকোনমিক জোন তৈরি করে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু এখন দেখেন, সেখানে একটা বিদ্যুৎ প্রকল্প হয়েছে আর এখানে একটা টানেল তৈরি করা হয়েছে যা অপরিকল্পিত পরিকল্পনার একটা অংশ। ফলে দেশ এখন টানেলের লোকসান বয়ে বেড়াচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বাপেক্সের এক-একটি গাড়ির দাম পাঁচ কোটি টাকা। কিন্তু, বিদ্যুৎ খাতের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। আবার জ্বালানি খাতে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে পদ্মা রেল সংযোগ করা হয়েছে যার বার্ষিক রাজস্ব আয়ের কথা ছিল ১৪শ কোটি টাকা। কিন্তু ৬ মাস পরে গিয়ে জানতে পারলাম মাত্র ৩৭ কোটি টাকার রাজস্ব এসেছে। এগুলো উন্নয়নের নামে অপচয় করা হয়েছে।
দায়বদ্ধতা থেকেই অন্তর্বর্তী সরকার দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, এই সরকার কোনো পেশিশক্তির কাছে দায়বদ্ধ নয়। এই সরকারের দায়বদ্ধতা আছে জুলাই অভ্যুত্থানে এক হাজারের বেশি শহীদ, ৩০ হাজারের বেশি আহত হয়ে যারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং অগণিত ছাত্র-জনতার প্রতি।
অন্তর্বর্তী সরকার এ দায়িত্বকে আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এই সরকার কোনো নির্বাচিত সরকার নয়। এ সরকার কোনো ক্ষমতা গ্রহণ করেনি, শুধু ছাত্র-জনতার অনুরোধে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। দায়িত্ব গ্রহণ করলে সে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সবসময় সতর্ক থাকতে হয়। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ দায়িত্বকে আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং তা রক্ষার্থে সবসময় সচেষ্ট রয়েছে। সাধারণ জনগণ আমাদের দায়িত্ব দিয়েছে যাতে আমরা দেশের সম্পদকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করি।
জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর, পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান, ডিআইজিআহসান হাবীব পলাশ, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন চেয়ারম্যানআমিন উল আহসান, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসির প্রতিনিধি মেজর মাহমুদ বক্তব্য রাখেন।