প্লাস্টিক ব্যবহারের সঙ্গে কোন আপোষ নেই মন্তব্য করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করেনি। বিষয়টি নিয়ে একটি গোষ্ঠী অপপ্রচার চালাচ্ছে। আগামী প্রজন্মের সুরক্ষায় প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের বিকল্প নেই বলেও জানান তিনি।
গঙ্গা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার দেশ চীন, ভারত, নেপাল ও বাংলাদেশ হয়ে প্রতিদিন প্রায় ৭৩ হাজার টন প্লাস্টিক বর্জ্য পড়ছে সমুদ্রে। পরিমাণের দিক থেকে এটি বিশ্বে পঞ্চম।
বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে ২০০৫ সালে ঢাকায় প্রতিদিন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদন হতো ১৭৮ টন। ২০২০ সাল এসে দাঁড়ায় ৬৪৬ টনে। অর্থাৎ, বিশ বছরে প্লাস্টিকের ব্যবহার বেড়েছে চার গুণের বেশি।
এক সময়ের উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার প্লাস্টিক এখন পরিবেশ দূষণ নামের দুঃস্বপ্নের শামিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর অপব্যবহার এবং অপর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ফলে বিশ্বব্যাপী বাস্তুতন্ত্রের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বুধবার সকালে রাজধানীতে ‘কনফারেন্স অন ফ্রম পলিসি টু অ্যাকশন’ অনুষ্ঠানে বন পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, প্লাস্টিক ব্যবহার পরিবেশ ধ্বংসের একটি বড় সমস্যা। একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিক নদী, জমিতে মিশে ১০০ বছরেও নষ্ট হচ্ছে না। মাইক্রো প্লাস্টিক মানবদেহে মিশে স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, প্লাস্টিক দূষণকে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে করার কারণ নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যার সাথে প্লাস্টিকও সম্পর্কিত। যে সব প্লাস্টিক ব্যাগ এরইমধ্যে বানানো হয়েছে, সেগুলো নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলবো।
পরিবেশ উপদেষ্টা আরও বলেন, ফিনল্যান্ড সরকারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা আমাদের প্লাস্টিক ব্যবহার কমানোর বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
তিনি জানান, প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করা নিয়ে একটি চক্র অপপ্রচার চালাচ্ছে। অন্তর্বতী সরকার সব প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধের কথা বলছে না। প্লাস্টিক ব্যাগের উপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, প্লাস্টিক ব্যবহার শতভাগ বন্ধ করা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এরজন্য সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো ছাড়া বিকল্প নেই।
প্লাস্টিক ব্যাগের ব্যবহার কিভাবে কমানো যায়, সেজন্য উন্নত দেশগুলোকেও এগিয়ে আসার আহবানও এসেছে এই অনুষ্ঠান থেকে।