প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, পুলিশ নিজের ইচ্ছায় নয়, বরং পতিত সরকারের চাপেই অপরাধে জড়িয়ে ছিল। কাজের মাধ্যমে সেই কালিমা মুছে ফেলতে হবে। তিনি বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করে পুলিশ। তাই পুলিশকে অবহেলা করে দেশ গড়া সম্ভব নয়।
সোমবার (১৭ মার্চ) পুলিশের মনোবল ফিরিয়ে আনতে বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। এতে অংশ নেন পুলিশের ১২৭ কর্মকর্তা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পুলিশকে এখন দেখলে মানুষ ভয় পায়। পুলিশ হবে বন্ধু, আশ্রয়দাতা। এই ইমেজ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে অতীতের সব কথা মানুষ ভুলে যাবে। কাজেই এটা নিয়ে কান্নাকাটি করে লাভ নাই। কারণ সেই ১৬ বছরের ইতিহাস আমরা বদলাতে পারবো না। ১৬ বছরে কালিমা সারা গায়ে মাখা আছে। রাতারাতি আমি পাল্টাতে পারবো না।
নির্বাচন যতো সামনে এগিয়ে আসবে, পরাজিত শক্তিরা ততোই বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করবে। সেই ষড়যন্ত্র সামাল দিতে পুলিশকে নির্দেশও দেন প্রধান উপদেষ্টা।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নারীদেরকে আমাদের সুরক্ষা দিতে হবে। এটা অনেক বড় কাজ। আমাদের অবহেলার কারণে সমাজে এটা দ্রুত বিস্তার লাভ করেছে। আমাদের দেশের অর্ধেক মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। তাদের প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার কেউ নাই। রাস্তাঘাটে চলতে ভয় পায়। এটা কোন ধরনের কথা! তাদের নিরাপত্তা দেওয়া পুলিশের আইনি দায়িত্ব। নিজ নিজ এলাকায় সেটি করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ...পুরনো বাংলাদেশ একটা অন্ধকার ও ভয়ঙ্কর একটা যুগ। সেই ভয়ঙ্কর একটা দিন থেকে সুন্দর ঝলমলে একটা দিনে আসতে চাই। সেটা হলো নতুন বাংলাদেশ। পুলিশ বাহিনীর সমস্যা হচ্ছে ওই অন্ধকার যুগে তারা সক্রিয় অংশগ্রহণকারী ছিল। নিজের ইচ্ছায় নয়, সরকারি হুকুম পেয়েছে কাজ করেছে। নতুন বাংলাদেশ তৈরি করতে তোমাদেরকে ওই চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
এ সময় পুলিশের কার্যক্রম পরিচালনায় বিভিন্ন সঙ্কটের কথা শোনেন প্রধান উপদেষ্টা। একই সঙ্গে সঙ্কট সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।
অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি এবং পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।
মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি আহসান হাবিব পলাশ এবং রাজশাহী পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম।