ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজির সিএসই ডিপার্টমেন্ট এবং কম্পিউটার সোসাইটি এগারোতম বারের জন্য আয়োজন করতে যাচ্ছে তাদের ফ্ল্যাগশিপ ইভেন্ট, আইইউটি ন্যাশনাল আইসিটি ফেস্ট, ২০২৪।
আগামী ২৬ তারিখ শুরু হতে যাওয়া দুইদিন ব্যাপী এই উৎসব দ্বারা দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের মনে তথ্য-প্রযুক্তি শিক্ষার প্রতি আগ্রহ জাগান্বিত ও বর্ধিত করার আশা রাখছেন আয়োজকগণ।
উৎসবটি আয়োজন করার প্রধান উদ্দেশ্য দেশের আইটি প্রেমিকদের সম্মিলিত করা এবং তাদের সাথে একত্রে বিভিন্ন নতুন প্রযুক্তিগত বিষয়ে আলোচনা ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ে অংশগ্রহণ করা।
এই উৎসব এ পর্দা নামবে ডেটাথন, ইন্টার বিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, UXparkle, আইটি বিজনেস কেস প্রতিযোগিতা, গেমজ্যাম, ই-স্পোর্টস অডিসি, ওপেনএপিআই হ্যাকাথন, ডেভপস হ্যাকাথন, ক্যাপচার দ্য ফ্ল্যাগ প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, কোড ক্যাটালিস্ট এবং অনেক আরও জনপ্রিয় প্রতিযোগিতার।
শুরুতেই আসে ডেটাথন, যা একটি সময়-সীমিত বিশ্লেষণাত্মক প্রতিযোগিতা যেখানে অংশগ্রহণকারীদের বাস্তব-বিশ্বের ডেটা সেট ব্যবহার করে সমস্যা সমাধানের জন্য চ্যালেঞ্জ করা হয়। এখানে প্রতিযোগীদের ১০টি আঞ্চলিক উপভাষার ডেটা প্রদান করা হবে এবং তা লেবেল ও প্রসেসিং করে পুরো দেশের ভাষা বুঝতে সক্ষম স্পিচ রিকগনিশন অ্যালগরিদম তৈরি করার দায়িত্ব দেওয়া হবে।
এছাড়াও রয়েছে আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা সময় এবং মেমোরি সীমাবদ্ধতার সাথে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং সমস্যার সমাধান করবে। রয়েছে UXparkle, একটি ইউএই/ইউএক্স চ্যালেঞ্জ যেখানে প্রতিযোগীদের একটি অ্যাপ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয়তা, তথ্য ইত্যাদি দেওয়া হয় এবং প্রতিযোগীদের সেই অ্যাপের একটি সৃজনশীল ও কার্যকর ইউসার ইন্টারফেস ডিজাইন করতে হবে। থাকবে আইটি বিজনেস কেস কম্পিটিশন, যেখানে অংশগ্রহণকারীদের একটি ব্যবসা সংক্রান্ত কেস বা সমস্যা প্রদান করা হবে, যা তাদের দক্ষতা ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাহায্যে সমাধান করতে হবে।
আরও আছে গেমজ্যাম, যেখানে প্রতিযোগীদের একটি নির্দিষ্ট থিম অনুসরণ করে একটি গেম ডিজাইন করতে হবে। এছাড়া থাকবে ই-স্পোর্টস ওডিসি, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা একে অপরের বিরুদ্ধে লড়বে ভ্যালোরেন্ট এবং ফিফার মতো জনপ্রিয় ভিডিও গেমে। থাকবে ওপেনএপিআই হ্যাকাথন, যেখানে প্রতিযোগীদের ডেভেলপমেন্ট স্কিল বাস্তব-বিশ্বের পরিস্থিতিতে যাচাই করা হবে।
আরও থাকছে ডেভঅপ্স হ্যাকাথন, যেখানে প্রতিযোগীদের বাস্তব-বিশ্বের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সর্বাধুনিক ডেভঅপ্স টুলস এবং স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করে উদ্ভাবনী পদ্ধতি তৈরি করতে হবে। রয়েছে ক্যাপচার দা ফ্ল্যাগ, যেখানে অংশগ্রহণকারীদের ক্রিপ্টোগ্রাফিক পাজল, রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং চ্যালেঞ্জ, হার্ডওয়্যার হ্যাকিং এর দক্ষতা দিয়ে সমাধান করা লাগবে সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যা।
পাশাপাশি থাকবে কোড ক্যাটালিস্ট: রিফ্যাক্টরিং প্রতিযোগিতা, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা তাদের রিফ্যাক্টরিং এবং ডিবাগিং দক্ষতা এবং অপ্টিমাইজেশন কৌশল নিয়ে একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করবে। স্কুল কলেজ এর শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত হবে কুইজ প্রতিযোগিতা, যেখানে তাদের সাধারণ জ্ঞান এবং দ্রুত চিন্তাভাবনা পরীক্ষা করা হবে।
উৎসবটির এসব বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করছে ৪০ টি বিশ্ববিদ্যালয় ও ২০টি স্কুল কলেজের প্রায় ১০০০ এর বেশি শিক্ষার্থী। এছাড়াও, উৎসবের ২ দিন জুড়ে বিভিন্ন সেমিনার ও ওয়ার্কশপে কথা বলতে উপস্থিত থাকবেন একাডেমিয়া ও ইন্ডাস্ট্রির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। এদের মধ্যে কুইন্স স্কুল অব কম্পিউটিং এর এসোসিয়েট প্রফেসর সালিমুর চৌধুরী, স্ট্রিমসটেক এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাঈনুল ইসলাম, ইন্টিলিজেন্ট মেশিনস এর সিইও এবং ফাউন্ডার মোহাম্মদ ওলি আহাদ উল্লেখযোগ্য।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী, এ.কে.এম. মোজাম্মেল হক। পাশাপাশি বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকবেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন। সমাপনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ।
আইইউটি সিএসই ডিপার্টমেন্ট ও কম্পিউটার সোসাইটি দ্বারা আয়োজিত আইসিটি উৎসবটি কম্পিউটার এর এই যুগের সিএসই এবং প্রযুক্তিপ্রেমী শিক্ষার্থীদের জন্য হতে যাচ্ছে নিজেদের স্কিল এবং সৃজনশীলতা প্রদর্শনের অসাধারণ একটি সুযোগ। এই উৎসবটির লাইন-আপে বিভিন্ন সৃজনশীল প্রতিযোগিতার বিশাল সারণি বিন্যাস করা হয়েছে, যা উচ্চশিক্ষার্থীদের এবং পেশাদারদের প্রযুক্তি দক্ষতা প্রদর্শন, ধারণা বিনিময় এবং উৎসাহের মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে।