চুরি ও ছিনতাই রোধে রাজধানীতে রাত ১১টার পর পাড়া-মহল্লার চায়ের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। দ্রুত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে ঢাকা মহানগরের ৫০ থানাকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
যদিও অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন এমন নির্দেশনা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যর্থতা ও অসহায়ত্বকেই প্রকাশ করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের তথ্য মতে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে দস্যুতা ও ছিনতাইয়ের মামলা হয়েছে ১৪৬টি আর চুরির ৪৩৮টি। চুরি ও ছিনতাই রোধে বিশেষ নির্দেশনা দিচ্ছে ডিএমপি কমিশনার।
রোববার রাজারবাগে মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় চুরি ছিনতাই রোধে রাত ১১টার পর পাড়া মহল্লার সব চায়ের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেন ডিএমপি কমিশনার।
ডিএমপি বলছে, অলিগলিতে মধ্যরাতেও অনেক স্থানে সারারাত চায়ের দোকানে চা খাওয়ার পাশাপাশি লোকজন আড্ডা দেয়। অনেক অপরাধীও সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে সুযোগ বুঝে চুরি-ছিনতাই করে। এ কারণেই এমন নির্দেশনা।
ডিএমপির মুখপাত্র ফারুক হোসেন বলেন, যেসব দোকানগুলো গভীর রাত পর্যন্ত খোলা থাকে, সেসব দোকানগুলোতে বসে ছিনতাইকারী ও চোরচক্র চা-সিগারেট খায় এবং তাদের যে রেকি করার সদস্যরা আছে, তারা বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় রেকি করে এসে তাদের জানায়।
তবে অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন নির্দেশনা নাগরিকের সাধারণ অধিকার ক্ষুণ্ণ করবে এবং সেই সাথে বাহিনীগুলোর সক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন উঠবে। যদিও পুলিশ বলছে, নাগরিকদের অধিকার খর্ব করা নয় বরং নিরাপত্তা নিশ্চিতেই এমন পদক্ষেপ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিশেষজ্ঞ ড. তৌহিদুল হক বলেন, চুরি এবং ছিনতাই নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না বলে, সকল নাগরিকদের নিয়ন্ত্রণ করতে চাইবে, এটা কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। এটা সাংবিধানিকভাবেও এক ধরণের ব্যত্যয়। এ ধরণের ঘোষণাগুলো দেওয়ার আগে নাগরিকদের অধিকারের বিষয়ে ভাবার প্রয়োজন আছে বলেও তিনি মনে করেন।
তবে বিষয়টি নাগরিক অধিকার খর্ব করার মতো কিছু নয় জানিয়ে ডিএমপি মুখপাত্র ফারুক হোসেন বলেন, শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে, চুরি-ছিনতাই রোধে এটি একটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত।
তবে, বেশি অপরাধ প্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে, সেসব এলাকায় পুলিশের কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।