ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে দ্রুত সময়ের মধ্যে শপথ পড়ানো না হলে শুক্রবার থেকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা সমর্থকরা। প্রায় দুই সপ্তাহের বেশি ধরে চলা বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত হয়ে ইশরাক হোসেন উপস্থিত হয়ে অভিযোগ করেন, সরকার বিষয়টি নিয়ে। অবিলম্বে শপথ পড়ানোর ব্যবস্থা না নিলে আন্দোলন আরও বেগবান করার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) ভোর থেকেই আকাশ জুড়ে কালো মেঘ আর মুষলধারে বৃষ্টি। সকাল থেকেই ঢাকার আকাশের কালোমেঘ বৃষ্টি হয়ে ঝরলেও দক্ষিণ সিটির মেয়র পদ নিয়ে তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তার মেঘ যেন কাটছেই না। একদিকে সরকারের অনড় অবস্থান অন্যদিকে ইশরাক সমর্থকদের টানা অবস্থান কর্মসূচি।
দুই পক্ষের শক্তি আর আইনি লড়াইয়ে ত্রাহি অবস্থা দক্ষিণ সিটির বাসিন্দাদের। গত ১৬ দিন ধরে তালাবন্ধ নগরভবনে মিলছে না কোন নাগরিক সেবা। টানা অবস্থান কর্মসূচিতে থাকা ইশরাক সমর্থকরা বলছেন, আদালতের রায়ের পরও সরকার ইচ্ছে করে ইশরাক হোসেনকে শপথ পড়ানোর কোন আয়োজন করছে না।
বেলা সোয়া দুইটার দিকে নগরভবনে এসে ইশরাকও অভিযোগ করেন, আদালতের রায় থাকার পরও শপথ পড়ানো নিয়ে টালবাহানা করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। দ্রুততম সময়ের মধ্যে শপথের আয়োজন করে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিলে আরও কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বিএনপির প্রার্থী হওয়ায় তার উপর বৈষম্য করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন ইশরাক। সরকারের ভেতরে থাকা একটি মহলের ষড়যন্ত্রে এসব হচ্ছে বলেও দাবি এই বিএনপির নেতার। ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের রায় ও গেজেটের কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে করা লিভ টু আপিল পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তির পর এ কথা বলেন তিনি।
সমর্থকদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে সরকারের উদ্দেশে ইশরাক হোসেন বলেন, এই রায়ের পর অবিলম্বে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে আমার শপথ গ্রহণের জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। আপনারা শপথ নিয়ে যে টালবাহানা করছেন, তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ টানা দুই সপ্তাহ নগর ভবনের সব কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। এটি করার কোনো এখতিয়ার আপনাদের নাই।
ইশরাক হোসেন আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষণার পরপর আপনাদের উচিত ছিল শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা। যেহেতু আগে এটা করেন নাই, এখন সর্বোচ্চ আদালতের এই নির্দেশনা আপনাদের ওপর এমনিতেই বর্তায়। যত দ্রুত সম্ভব শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করবেন। অন্যথায় আপনাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতের অবমাননার অভিযোগ চলে আসবে।
ইশরাক হোসেন আরও বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আইনের শাসনে বিশ্বাসী। আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ বাংলাদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে গ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু আপনারা দেখেছেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা এবং এর সঙ্গে জড়িত কিছু প্রশাসনের কর্মকর্তা আমাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করেছে। আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনীত প্রার্থী ছিলাম বলে আমার প্রতি এই বৈষম্য করা হয়েছিল। আজকের রায়ের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হলো।
সরকার একজন মেয়রকে শপথ পড়াতে ব্যর্থ উল্লেখ করে ইশরাক বলেন, ভবিষ্যতে ৩০০ জন এমপিকে শপথ পড়াতে কীভাবে তারা কার্যকর উদ্যোগ নেবে? এটা নিয়ে জনমনে যথেষ্ট সন্দেহ তৈরি হয়েছে।