মরমী কবি পাগলা কানাইয়ের ২১২ তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ঝিনাইদহের সদর উপজেলার বেড়বাড়ি গ্রামে চলছে পাঁচ দিনের উৎসব।
এই উৎসব আয়োজনের প্রথম দিনের মূল আকর্ষণ ছিলো লাঠিখেলা। যা দেখতে ভিড় করেন বহু দর্শক। মেলার প্রথম দিনে দুর-দুরান্ত থেকে কবির ভক্তরাও উপস্থিত হয়েছে।
‘মরণের আগে মরো, সমনকে শান্ত করো, যদি তাই করতে পারো, ভবো পারে যাবি মন রসনা’ এই মর্ম বানীর কবি ও সাধক পাগলা কানাইয়ের সমাধি ঝিনাইদহের বেড়বাড়িতে।
ঝিনাইদহের লেবুতলা গ্রামে এক দরিদ্র কৃষক পরিবারে তাঁর জন্ম, কিন্তু তাঁর জীবন কেটেছে নিজ গ্রামের বাইরে। অল্প বয়সে পিতা-মাতাকে হারিয়ে ভগ্নির আশ্রয়ে তার বাল্য ও কৈশোর কাটে।
কানাইয়ের প্রকৃত নাম কানাই শেখ, কিন্তু পাগলা কানাই নামেই তিনি সমধিক পরিচিত। তাঁর কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। তিনি কিছুকাল স্থানীয় নীলকুঠিতে খালাসির কাজ করেন।
বিবাহিত জীবন যাপন করলেও তিনি ক্রমশ আধ্যাত্মিকতার প্রতি আকৃষ্ট হন। কানাই ছিলেন স্বভাবকবি। তিনি মুখে মুখে গান রচনা করতেন এবং নিজেই গেয়ে তা প্রচার করতেন।
প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক গান রচনা ও পরিবেশনায় তিনি পারদর্শী ছিলেন। শিষ্যদের সহযোগে তিনি যশোর, কুষ্টিয়া, পাবনা, রাজশাহী, বগুড়া প্রভৃতি অঞ্চলে গান পরিবেশন করতেন।
মরমি সাধক ও সঙ্গীত রচয়িতা পাগলা কানাইয়ের (১৮০৯-১৮৮৯) ২১২ তম জন্মজয়ন্তীতে প্রতি বছরের মতো এবার আয়োজন করা হয়েছে পাঁচ দিনের উৎসব।
ঝিনাইদহ সদর হতে সাত কিলোমিটার দুরে অবস্থিত মরমী কবি পাগলাকানাইয়ের মাজার প্রাঙ্গণে আয়োজিত উৎসবের প্রথম দিনের প্রথম দিনের মূল আয়োজন ছিলো লাঠিখেলা।
ঢাক ঢোল আর কাসার ঘন্টার শব্দে উৎসব মুখর হয়পরিবেশ। বাদ্যের তালে তালে শুরুতে শারীরিক কসরত দেখায় লাঠিয়ালরা।
খেলায় ১২টি লাঠিয়াল দল অংশ নেয়। আর খেলা দেখতে ভিড় করেন শিশু থেকে বয়স্করা। লাঠিয়ালদের সাথে উল্লাসে মেতে উঠেন তারাও।
লাঠি খেলা ছাড়াও কবির জীবনী নিয়ে আলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগীতাসহ সাংস্কৃতিক নানা আয়োজন থাকবে পাঁচদিনের এ উৎসবে। আর এ উপলক্ষে বসেছে গ্রামীণ মেলাও।
একাত্তর/ এনএ