আসন্ন ঈদুল আজহায় কম খরচে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ঢাকায় কোরবানির পশু পরিবহনের ব্যবস্থা করেছে রেলওয়ে। তবে এবার পশুগুলো ‘ক্যাটল স্পেশাল ট্রেন’ চালু না করে ‘ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেনে’র সঙ্গে তিনটি ওয়াগনে পরিবহন করা হচ্ছে।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আ. ওদুদ ট্রেনটির উদ্বোধনের মাধ্যমে পশু পরিবহন সেবা চালু হয়। যা চলবে ২৬ জুন পর্যন্ত।
রহনপুর রেল স্টেশনের মাস্টার মো. ওবাইদুল্লাহ জানান, ঈদুল আজহা উপলক্ষে তৃতীয় বারের মতো খামারি-ব্যবসায়ীদের চাহিদার ভিত্তিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর রেলস্টেশন থেকে এ সেবা চালু করা হয়েছে।
তিনি জানান, ট্রেনটি বিকেল চারটায় রহনপুর রেল স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। ট্রেনটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেলস্টেশনসহ আরও ছয়টি স্টেশনে কোরবানির পশু নিয়ে ঢাকার তেজগাঁওয়ে পৌঁছাবে গভীর রাতে।
গত বছর ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন চালুর ১১ দিনের মাথায় লোকসানের অজুহাতে বন্ধ করে দিয়ে ক্যাটল ট্রেনটি চালু করা হয়। তবে এ বছর আম পরিবহন কমে যাওয়ায় সাতটি ওয়াগনের বদলে একটি ওয়াগন কমিয়ে তিনটি ওয়াগনে আম এবং তিনটি ওয়াগনে কোরবানির পশু পরিবহন করার সিদ্ধান্ত নেয় রেল কর্তৃপক্ষ।
তিনি জানান, প্রতি ওয়াগনে ২০টি করে গরু পরিবহন করা যাবে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, কাঁকনহাট, রাজশাহী থেকে একটি ওয়াগনের ভাড়া হবে ১১ হাজার ৮৩০ টাকা। এসব স্টেশন থেকে একটি গরু পরিবহনের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৯২ টাকা।
তিনি আরও জানান, কোরবানি পশু ও আম নিয়ে জেলার রহনপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিকেল চারটায় ছাড়বে ট্রেনটি। চাঁপাইনবাগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিকেল ছয়টা, কাঁকনহাট রেলওয়ে স্টেশন থেকে বিকেল ছয়টা ৪০ মিনিটে, বড়াল ব্রিজে রাত ৯টা ২৫ মিনিট, সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে রাত ১০টা এবং বঙ্গবন্ধু সেতু (পূর্ব) থেকে রাত ১০টা ৪০ মিনিটে গরু নিয়ে তেজগাঁওয়ের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। মাঝে জয়দেবপুর ও ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনে আম বুকিং করার জন্য দাঁড়াবে। ট্রেনটি তেজগাঁও পৌঁছাবে রাত একটা ১৫ মিনিটে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের আইনুল হক জানান, ক্যাটল ট্রেন চালু হবার পর থেকে খামারে সব গরু ক্যাটল ট্রেনে করে ঢাকায় বিক্রি করেছেন। এবছরও তার খামারের ছয়টি গরু নিয়ে শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।
একই উপজেলার খামারি শহিদুল ইসলাম জানান, একটি ট্রাক ভাড়া করতে প্রায় ৩০ হাজার টাকা লাগে। কিন্তু এ ট্রেনে একটি ওয়াগনে মাত্র ১১ হাজার ৮৩০ টাকায় নিরাপদে ঢাকায় গরু নিতে পারছেন। তবে এ ট্রেনটি অন্তত আরও পাঁচ দিন আগে চালু করা হলে খামারিদের উপকার হতো।
আরও পড়ুন: মিষ্টির প্যাকেটে ঘুষ, ডিবির হাতে ধরা দুদক কর্মকর্তা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিক জানান, এ বছর ম্যাঙ্গো স্পেশাল ট্রেন বন্ধ না করে এক সঙ্গে আম ও পশু পরিবহন করা হচ্ছে। এতে আমরা আনন্দিত। তবে পুরো ওয়াগন ভাড়া নয়, ক্ষুদ্র খামারিদের কথা মাথায় রেখে যারা একটি বা দুটি পশু পরিবহন করাতে চান সেই ব্যবস্থাও রাখা হোক।
প্রথম দিন জেলার অন্য কোনো স্টেশন থেকে পশু পরিবহনের জন্য বুকিং না হলেও একমাত্র চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশন থেকে প্রথম দিন ৪০টি গরু এবং ছয়টি ছাগল নিয়ে ঢাকার পথে যাত্রা করেছে স্পেশাল এ ট্রেন। প্রথম দিন এ থেকে রেলওয়ের আয় হয়েছে ২৩ হাজার ৬৬০ টাকা। প্রতিদিন তিনটি ওয়াগনে পশু পরিবহন করার সিদ্ধান্ত হলেও প্রথম দিন দুটি ওয়াগনে পশু পরিবহন করা হয়।
একাত্তর/এসি