চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সাজেদ উল্লাহর লাশ দাফনে বাধা দেওয়ার অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। এমনকি শেষ বিদায়ে নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় সম্মাননা দেওয়ার ব্যবস্থা করাও সম্ভব হয়নি।
বুধবার (৪ আগস্ট) মিরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নের পশ্চিম জোয়ার গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। চট্টগ্রাম নগরীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মুক্তিযোদ্ধা সাজেদ উল্ল্যাহ। তার লাশ দাফনের জন্য মৃত মুক্তিযোদ্ধার ছেলে অ্যাম্বুলেন্সে বাড়ি এলে বাড়ির অন্যান্য লোকজন অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে বাঁধা দেয় এবং দাফনে অংশগ্রহণ করবে না জানায়।
মৃত মুক্তিযোদ্ধা সাজেদ উল্ল্যাহর ছেলে হোসেন জামিল জানান, তারা চট্টগ্রাম শহরেই থাকতেন। বাবার মৃত্যুর পর দাফনের জন্য লাশ নিয়ে এলে বাড়ির লোকজন অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতে বাঁধা দেয়। এসময় গোসল করানো, কবর খোঁড়া ও দাফনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বলেও জানান তারা। বিষয়টি করেরহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে জানালে তিনি 'শেষ বিদায়ের বন্ধু' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে খবর দেন। তারাই দাফনের ব্যবস্থা করেছে।
এ ব্যাপারে মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান বলেন, বুধবার সকাল ৮টায় তিনি জানতে পারেন যে, সকাল ১০টায় মুক্তিযোদ্ধা সাজেদ উল্ল্যাহর জানাজা। সে হিসেবেই গার্ড অব অনার দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারা। এরমধ্যেই সকাল ৯টার দিকে তারা জানতে পারেন দাফন হয়ে গেছে। যে কারণে গার্ড অব অনার দেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে দাফনে বাঁধা দেওয়ার বিষয়টি তাকে মৃতের পরিবার বা মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে কেউ অবহিত করেননি বলে জানান ইউএনও।
আরও পড়ুন: চিলাহাটি স্টেশনে এলো ভারতের আরেকটি পণ্যবাহী ট্রেন
তিনি আরও বলেন, মৃত সাজেদ উল্ল্যাহর ছেলেকে ফোন করে জানতে পারেন যে, পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও করোনায় আক্রান্ত। বিশেষ করে তার মা করোনা আক্রান্ত হয়ে আইসিইউতে আছেন। যে কারণে দ্রুত দাফনকাজ শেষ করে তিনি শহরে চলে যান।
বাঁধা প্রদান ও দাফনে অসহযোগিতার বিষয়টি ইউএনওকে অবহিত করা প্রসঙ্গে মৃত মুক্তিযোদ্ধা সাজেদ উল্ল্যাহর ছেলে হোসেন জামিল জানান, ইউএনওকে অবহিত করতে সকাল ৬টায় তার বাসায় গিয়েছিলেন তিনি। খুব সকাল হওয়ায় তার সঙ্গে দেখা করা বা তার মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। । পরে বিষয়টি এলাকার একজন মুক্তিযোদ্ধাকে জানালে তিনি ব্যবস্থা নিচ্ছেন বলে জানান।
তড়িঘড়ি দাফনের বিষয়ে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসনের লোকজন আসতে সকাল ১০টা বাজবে বলে জানার পর ফোনে ওই মুক্তিযোদ্ধাকে তিনি বলেন, যেহেতু গ্রামের লোকজন জানাজায় আসবে না, আপনাদেরও আসতে সময় লাগছে, আমাকেও দ্রুত শহরে যেতে হবে, তাই আগেই দাফন করে ফেলি। এজন্য সকাল ৯টায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির সহযোগিতায় দাফন সম্পন্ন করা হয়।
ছবি: সংগৃহীত
একাত্তর/জো/এসজে