লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতন ও নাকে খত দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) দুপুরে ব্যবসায়ী সুমন ভূঁইয়াসহ ৩ জনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করা হয়।
পুলিশ জানান, মামলায় সদর উপজেলার কাজির দিঘীর পাড় বাজারের ব্যবসায়ী জহির উদ্দিন, নিজাম উদ্দিন ও সুমন ভূঁইয়াসহ আরো অজ্ঞাত ৪ থেকে ৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী রহমত উল্লাহ লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১৪নং ওয়ার্ডের পশ্চিম লক্ষ্মীপুর গ্রামের চৌকিদার বাড়ির আহমদ উল্লাহর ছেলে।
জানা গেছে, চুরির অপবাদে গত রোববার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের কাজির দিঘীরপাড় বাজারে এক যুবককে খুঁটিতে বেঁধে মারধর ও নাকে খত দেওয়া হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওতে দেখা যায়, রহমত উল্লাহ নামের ওই যুবককে পেছন দিক থেকে একটি খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়েছে। এসময় বাজারের ব্যবসায়ী নিজামসহ কয়েকজনের হাতে লাঠি ছিলো। একপর্যায়ে সুমন নামের একজন এসে রহমতকে নাকে খত দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত যেতে বলে। বলা হয় নাকে খত দিয়ে মসজিদ পর্যন্ত গেলেই তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। কিন্তু নাকে খত দেওয়া শেষ হতেই পেছন থেকে তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করতে দেখা যায়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় রহমত উল্লাহকে সন্দেহজনকভাবে আটক করে সদর উপজেলার কাজির দিঘীর পাড় বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী। পরবর্তীতে চোর অপবাদ দিয়ে তাকে বেদম মারধর করা হয়। একপর্যায়ে বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা মতিন ভূঁইয়ার দোকানের সামনের খুঁটিতে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করা হয়। এরপর পিচ ঢালা সড়কে নাকে খত দিতে বাধ্য করে অভিযুক্তদের কয়েকজন। প্রকাশ্যে নির্যাতন সহ্যসহ নাকে খত দিয়ে ছাড়া পান রহমত উল্লাহ।
অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের দাবি, চুরির উদ্দেশ্যে বন্ধ থাকা দোকানে প্রবেশ করে রহমত উল্লাহ। এ সময় দোকানের মালিক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাকে আটক করে। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে কেউ কেউ তাকে মারধর ও নাকে খত দিয়েছে।
এদিকে আবারো হামলার ভয়ে আত্মগোপনে থাকায় বাদী রহমত উল্লাহ’র সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সদর মডেল থানার ওসি আবদুল মোন্নাফ জানান, ঘটনার ভিডিও দেখার পরই পুলিশ নির্যাতনকারীদের খুঁজছে। তবে পালিয়ে থাকায় তাদের আটক করা সম্ভব হয়নি। মামলা হয়েছে। পুলিশ এজহারভুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।