কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জনকে শোকজ করেছেন আদালত। সোমবার (২১ এপ্রিল) কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ পাঁচ নম্বর আদালতের বিচারক ফরিদা ইয়াসমিন এ আদেশ দেন।
আদালতের বিবরণে জানা গেছে, আকলিমা আক্তার নামের এক নারীর বিরুদ্ধে কুমিল্লার বুড়িচংয়ের ষোলনল এলাকার সাজেদা আক্তার ফাতেমার মেয়ে উম্মে সাবিহা ইসলামকে হত্যার অভিযোগ ওঠে। ২০২৩ সালের ৩০ অক্টোবরের ঘটনার পরদিন থানায় মামলা করেন সাজেদা আক্তার ফাতেমা।
এজাহারে তিনি লিখেন, আসামি আকলিমা আক্তার তার মেয়ের সাথে খেলাধুলা করার জন্য উম্মে সাবিহা ইসলামকে তার ঘরে নিয়ে যেতো। ৩০ অক্টোবর আমার মেয়ে উম্মে সাবিহা ইসলামকে (২) আকলিমার ঘরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা আকলিমা আক্তারকে (২২) আটক করে। সাজেদার অভিযোগ, আকলিমা আক্তার পরিকল্পিতভাবে তার মেয়ে সাবিহা ইসলামকে ঘরে নিয়া হত্যা করেছে।
এঘটনার পর ৩০ জুন ২০২৪ সালে বুড়িচং থানার এসআই নুরুল ইসলাম তদন্ত শেষে আদালতে একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। এতে একমাত্র আসামি আকলিমাকে অভিযুক্ত করা হয়। এরপর আসামি পক্ষ দাবি করে আকলিমা মানসিক ভারসাম্যহীন। তাই তাকে যেন আদালত খালাস দেয়। এদিকে ঘটনার পর ৩১ অক্টোবর আকলিমা নিজেই ১৬৪ ধারায় ঘটনার বর্ণনা দেন এবং ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত আদালতে বলেন।
দুই পক্ষের সুরাহা না হওয়ায় চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি আদালত কুমিল্লার সিভিল সার্জন কার্যালয়কে ওই নারীর মানসিক অবস্থার বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলেন।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. ফারিয়া জাফরিন আনসারী, কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাইকিয়াট্রি বিভাগের প্রধান ডা. মো. শাহেদুল ইসলাম ও সিভিল সার্জন ডা. আলী নুর মোহাম্মদ বশীর আহমেদের সমন্বয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়।
কমিটি ৩ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। পরে একইদিন আদালতে উপস্থিত হয়ে এক জন চিকিৎসককে বিষয়টি বর্ণনার জন্য আদেশ দেয়া হয়।
সোমবার (২১ এপ্রিল) আদালতে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য দেন ডা. ফারিয়া জাফরিন আনসারী। তার উত্তরে আদালত সন্তুষ্ট না হওয়ায় সিভিল সার্জন ডা. আলী নুর মোহাম্মদ বশীর আহমেদকে শোকজ করা হয়েছে।
এবিষয়ে কুমিল্লার সিভিল সার্জন ডা. আলী নুর মোহাম্মদ বশীর আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।