অস্ত্রের মুখে কলেজ ছাত্রীকে তুলে নিয়ে ধর্ষণে অভিযুক্ত টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া ওরফে বড় মনিরকে কলেজ সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে।
মামলা চলমান থাকার মধ্যেই সম্প্রতি ভুয়াপুর লোকমান ফকির মহিলা কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি পদে নিয়োগ দেয়া হয় বড় মনিরকে। এ ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
সোমবার বড় মনিরকে কলেজ সভাপতির পদ থেকে অপসারণ করার কথা জানিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বড় মনিরের জায়গায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে সাময়িক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
একের পর এক ধর্ষণ কাণ্ডে আলোচিত বড় মনিরকে ধরতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। তবে তিনি পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে পলাতকই রয়েছেন। অবশ্য পুলিশ আশা করছে, ধর্ষণে অভিযুক্ত বড় মনিরকে দ্রুতই আইনের আওতায় আনা হবে।
কলেজ সভাপতি হিসেবে নিয়োগের দুই সপ্তাহ পর শুক্রবার রাতে তুরাগ থানার প্রিয়াঙ্কা সিটি আবাসিক এলাকায় বড় মনিরের ফ্ল্যাট থেকে এক কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়।
তাকে অস্ত্রের মুখে আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় বলে মামলায় বড় মনিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে ওই ছাত্রী।
ওইদিন রাতে ট্রিপল নাইনে আসা একটি ফোন কলের সূত্র ধরে বড় মনিরের ফ্ল্যাট থেকে এক কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধার করে পুলিশ। তবে সে রাতেই ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় বড় মনির।
ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়েরের পরই ভুক্তভোগী কলেজ ছাত্রীর প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা হয়। ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে পুলিশ।
বড় মনির হলেন টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ওরফে ছোট মনিরের বড় ভাই। বড় মনিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন নয়।
কিন্তু আইনের বেড়াজাল ভেঙে কীভাবে মনির পরিবার এসব কাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় মনি পরিবার বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
গত বছর টাঙ্গাইলে এষা নামে আরেক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ এবং তারপর জোর করে গর্ভপাত করানোর অভিযোগও আনা হয় বড় মনিরের বিরুদ্ধে।
এষার দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় বড় মনির গ্রেপ্তার হয়। এরপর কারাগারে বসেই এষাকে হত্যার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে তখন টাঙ্গাইলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চেয়েও পায়নি এষা।
শেষ পর্যন্ত এষার রহস্যজনক মৃত্যু হয়। অথচ এই ঘটনায় বড় মনিরকে জিজ্ঞাসাবাদ না করে উলটো নিহত এষার এক বন্ধুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
টাঙ্গাইলের নিক্সন হত্যার সাথেও বড় মনি জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা।