করোনা মহামারীর ধাক্কায় দেড় বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষে ফেরার আনন্দ অল্প দিনের মধ্যেই মিলিয়ে যায় ওমিক্রনের বাড়-বাড়ন্তে।
আবারও বন্ধ হয়ে যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে এবার অল্প সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
সেই সিদ্ধান্ত মেনে মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) থেকে রাজধানীর মতো সারাদেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস শুরু হয়েছে স্কুল ও কলেজে। করোনার বিধিনিষেধ আর নির্দেশনা মেনেই দরজা খুলেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো।
তাপমাত্রা মেপে ও করোনার টিকার দুই ডোজ সনদ দেখানোর পরই শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষে প্রবেশ করতে দিয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্তৃপক্ষ।
প্রায় এক মাস পর আবারও প্রিয় শিক্ষালয় ও শ্রেণীকক্ষে ফিরতে পেরে আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতে উঠেছে সব স্কুলের শিক্ষার্থী। আর শিক্ষার্থীদের পেয়ে খুশি শিক্ষকরাও।
এক মাস পর স্কুল ক্যাম্পাসে এসেছেন নেত্রকোণা দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী মুমতাহিনা। তাঁর মত সব শিক্ষার্থীদের চোখে ছিল আনন্দের ঝিলিক।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক সুব্রত সরকার জানালেন, শিক্ষার্থীদের শরীরের তাপমাত্রা মেপে ও করোনার টিকার দুই ডোজ সনদ দেখানোর পরই শ্রেণীকক্ষে ঢুকতে দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: নাম চূড়ান্ত, ১০ জনের তালিকা যাবে রাষ্ট্রপতির কাছে
চট্টগ্রামে স্কুলে প্রবেশের সময় সব স্বাস্থ্যবিধি মেনে ছাত্র ছাত্রীরা স্কুলে প্রবেশ করে। অনেক দিন পর ছাত্র ছাত্রীরা স্কুলে আসতে পেরে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তারা।
একই চিত্র দেখা গেছে খুলনা মহানগরীর স্কুল-কলেজগুলোকে। সেখানের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই করোনা টিকার দুই ডোজ নেয়া হয়ে গেছে। তাই তাদের দাবি, স্কুল চলুক পুরোদমে।
একইভাবে রাজশাহীতে স্কুলে এসে আনন্দে মাতে শিক্ষার্থীরা। তারা বলছে স্কুল মাঠ থেকে বন্ধুদের সঙ্গে মজা ক্লাসে যাওয়ার আনন্দ অন্যরকম।
বরিশালেও প্রথম দিনে নিরাপদ দূরত্ব রেখেই ক্লাসে বসে শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে স্কুলের প্রবেশ পথে ছিলো হাত ধোয়ার ব্যবস্থা।
ময়মনসিংহের স্কুলগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের ঢুকতে দেখা হয়। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানান, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মনিটর করা হচ্ছে।
তবে রংপুরে রোটেশনের ভিত্তিতে ক্লাস শুরু হবার কারণে প্রথম দিনে বহু শিক্ষার্থী ফিরে যায়। সেখানে সপ্তাহে দুই দিন পর্যায়ক্রমে সব শ্রেণির ক্লাস চলবে।
সিলেটেও স্কুল ও কলেজের প্রবেশ পথে শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়। সরকারি বিধিনিষেধ কঠোরভাবে মানা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করে কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, সারাদেশে ওমিক্রনসহ করোনাভাইরাসের ব্যাপক প্রাদুর্ভাবের মুখে গত ২১ জানুয়ারি দেশের সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার।
মঙ্গলবার থেকে মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা হলেও প্রাথমিক বিদ্যালয় খুলবে ২ মার্চ।
এছাড়া প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কবে ক্লাসে ফিরতে পারবে, এই বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। তবে শিগগিরই জানানো হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
একাত্তর/এসজে