এফডিসিতে এফডিসি থেকে প্রতি মাসে আয় হয় ৪০ থেকে ৪৫ লাখ টাকা। আর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মাসিক বেতন প্রায় এক কোটি ১৫ লাখ। মাস শেষে কর্মীদের বেতন মেটাতে প্রায় ৭০ লাখ টাকা খরচ হয়। সেই টাকা ভর্তুকির মাধ্যমে শোধ করে সরকার। এফডিসির প্রতি মাসের চিত্র যখন এমন, তখন চলচ্চিত্র উন্নয়নে কতোটা ভূমিকা রাখবে এই প্রতিষ্ঠান!
বিএফডিসিতে ঢুকতেই যেকারও চোখে পড়বে বিশাল এক ব্যানার, যেখানে লেখা পাঁচ মাসের বেতন আটকে থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন বিএফডিসির ২১৫ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী। তাই তাদের প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করা।
বিএফডিসিতে এমন চিত্র নতুন নয়, এর আগে বহুবার সংসারের খরচ মেটাতে তারা আন্দোলন করেছেন। এফডিসিতে নেই চলচ্চিত্রের কোনো শুটিং, হারিয়েছে আগের সেই জৌলুশও। তাদের খরচ মেটাতে বছরে প্রায় ১০ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে সরকারকে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে পাঁচ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে ঢেলে সাজাতে হবে প্রতিষ্ঠনটিকে। শুটিং বাবদ খরচ কমানোর পাশাপাশি দক্ষ কর্মকর্তা কর্মচারী ও টেকনেশিয়ান থাকতে হবে।
চলচ্চিত্র পরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার বলেন, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রায়ই বেতন পায় না, এটি অনেক দিন ধরে চলে আসছে। এখানে ব্যবস্থাপনা আরও উৎপাদনমুখী ও কার্যকর করা উচিত।
তিনি বলেন, কেন এফডিসিতে পরিচালকরার শুটিং করে না, কেন মাসের পর ফ্লোরগুলো পড়ে থাকে, এসবের সমাধান বের করতে পারলেই প্রতিষ্ঠানটি ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
গুলজার বলেন, যখন আমরা একটা সিস্টেমে পরিবর্তন আনতে চাই, তখন সেটা এফডিসির পরিচালনা পর্ষদের মিটিংয়ে উপস্থাপন করতে হয়। কিন্তু সেই মিটিং ছয় মাসে একটি হয় কি না সন্দেহ আছে। কখনও কখনও এক বছরেও হয়না। সেখানে চেঞ্জটা কখন করবে, আর বর্তমান সময়ের সঙ্গে সমন্বয় কখন করবে! ফলে এফডিসি থেকে নির্মাতা অনেকেই সরে যাচ্ছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির ফ্লোর, যন্ত্রপাতিসহ অনেক কিছুই বেকার পড়ে থাকছে, সেখান থেকে কোনো আয় আসছেনা।
বিএফডিসির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ম হামিদ বলেন, এখানে অনেকেই চাকরির সূত্রে আসেন। এটা হলে হবে না। এখানে ব্যবসায়ীক ও পেশাদারী মনোভাব নিয়ে আসতে হবে। সব সময় সেবা দেওয়ার জায়গাটাকে প্রধান হিসেবে দেখতে হবে, চাকরি না।
তিনি বলেন, আমরা কি ১০০ অথবা ২০০ কোটি টাকার একটা ফান্ড করে দিতে পারি না, যেখান থেকে তারা চলবে? এগুলো আমরা বলি অনেকেই। কিন্তু কাজের সময় প্রয়োরিটি যখন তৈরি করি তখন এফডিসি আসেনা। তখন মনে হয়টা এটাতো চলছে, লুজিং কনসার্ন, এটাতে আমরা কেন দেবো। কিন্তু এটা যদি এমন হতো; আমাদের লুজিং কনসার্ন তো কতো আছে! বহু প্রতিষ্ঠান আছে যেখানে আমরা ব্যয় করি, আয় করিনা। ব্যয়টাই সেখানে রাষ্ট্রের সেবা। এভাবেও দেখার সুযোগ আছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বহুবছর এখানে বড় কোন বিনিয়োগ হচ্ছে না। সংস্কৃতির মান বাড়াতে অবশ্যই এখানে বিনিযোগ করতে হবে বলে মনে করেন তারা।