এক বৃদ্ধের সাদামাটা জীবনযাপন। খাওয়া-দাওয়া, ঘুমোনো, ঘরে বসে গেম আর আশপাশে ঘুরে বেড়ানো ছাড়া তার বাকি সময়টা কাটতো টিভি সিরিয়াল দেখে। আর যখন তিনি ফুরফুরে মেজাজে থাকতেন, তখন তার নজর থাকতো বাড়ির পরিচারিকার দিকে। একটু খুনসুটি, দুষ্টুমি এসব নিয়েই বয়ে চলেছিল বৃদ্ধের গতানুগতিক সাদাকালো জীবন।
কিন্তু এই সাধারণ বহমান জীবনে সবকিছু বদলে দিল একটা ফোন কল। আর ঠিক এখান থেকেই শুরু হয় চমক।
অল্প চরিত্র নিয়েও যে ভাল ছবি হতে পারে তা দেখিয়ে দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। ঋতুপর্ণ পরবর্তী যুগে অনেক নতুন পরিচালক এসেছেন। তবে ছবি আসে ছবি যায়, দাগ কাটে কম। এবার এল ‘বেলাইন’।
ছবির তিনটি মূল চরিত্র। এক বৃদ্ধ ও এক যুগল, যারা বিবাহিত নয় লিভ-ইন করে। এদের রোজনামচা নিয়েই এগোতে থাকে গল্প। কিন্তু মজার বিষয়, তিনটি চরিত্রের কোনও নাম নেই ছবিতে।
একাকীত্ব থেকে আসে মানসিক অবসাদ, অপ্রাপ্তি আর যৌনতাহীন জীবন। সবকিছুর মিশেলে কয়েকটা দিনের গল্প বলেছেন পরিচালক শমীক রায়চৌধুরী। অথচ গল্প বলার ধাঁচ নতুন। সেটাই 'বেলাইন' ছবির বিশেযত্ব।
যৌনতায় কান পাতলেন পরাণ!
একাকীত্ব নিয়ে বাংলায় কম ছবি হয়নি। কিন্তু এ ছবিতে একাকীত্ব থাকলেও রয়েছে এক ছকভাঙা প্রয়াস। একদিন তার কাছে ক্রস কানেকশনে বেলাইন হয়ে চলে আসা সেই তরুণীর ফোনকলে বৃদ্ধ চুপচাপ কান পেতে মেয়েটির দিনযাপনের গল্প শুনে যেতে থাকেন। মেয়েটিও একা। সম্পর্কে থাকলেও বিবাহিত নয়, প্রেমিকের সঙ্গে লিভ-ইনে থাকে।
বৃদ্ধের একাকীত্বে জড়িয়ে আছে ফেলে আসা জীবনের যৌনতা। আর মেয়েটির একাকীত্বে জড়িয়ে রয়েছে অপূর্ণ যৌনতা। বেলাইনে বৃদ্ধটির স্বপ্নপ্রেয়সী হয়ে ওঠে মেয়েটি। যদিও মেয়েটি বৃদ্ধের অবস্থান টের পায় না। মেয়েটির শিৎকার শব্দে বৃদ্ধের সন্ন্যাস জীবনে উঠতে থাকে পাল তোলা ঢেউ।
কান পেতে কপোত-কপোতীর গোপন গল্প শোনা বৃদ্ধের নেশা হয়ে দাঁড়ায়। অথচ বাস্তবে কি এমন কিছু ঘটতে পারে? নাকি সবটাই কল্পদৃশ্য? এমনই আলো-আঁধারি পথে হাঁটাতে থাকেন পরিচালক।
বেলাইন ২০২৪ সালের একটি বাংলা ভাষার ভারতীয় মনস্তাত্ত্বিক রহস্য-রোমাঞ্চ চলচ্চিত্র। এটি পরিচালনা করেছেন শমীক রায়চৌধুরী। দৃষ্টিশ্রী আর্টস প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যানারে প্রযোজনা করেছেন হরিৎ রত্ন এবং মনীষা রত্ন। প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্রেয়া ভট্টাচার্য ও তথাগত মুখোপাধ্যায়। এটি ২০২৪ সালের ২৯শে মার্চ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে।