গাজা উপত্যকায় প্রতিদিন দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। বাড়ছে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি। অনেকে পুরো পরিবার হয়ে নিস্ব। এরই মধ্যে, মৌলিক চাহিদার চরম অভাবে মানবেতর অবস্থায় দিন কাটছে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজাবাসীর। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক মহল হেলিকপ্টারে করে যে প্যরাসুটের সাহায্যে ত্রাণ ফেলছে, সেই প্যারাস্যুটের কাপড় সংগ্রহ করে তাঁবু তৈরি করছেন স্থানীয়রা।
প্রতি মুহূর্তেই হামলার হুমকি, রক্তপাত আর বাড়তে থাকা হাহাকারের মধ্যেই দিন কাটছে গাজা উপত্যকার মানুষের। নেই এক দণ্ড স্বস্তিও। এরই মধ্যে, গাজার বেশিরভাগ বাসিন্দা যে রাফাহ সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে সেখানেই এখন প্রতিদিন হামলা চালিয়ে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছে ইসরাইলের সেনাবাহিনী।
বাড়ছে মানবিক সংকট। স্বজনহারাদের হাহাকার থামাবার মতো নেই কোন সাত্ত্বনা। ফিলিস্তিনিদের কথায় আমরা এক একটি প্রাণ বিশ্বের কাছে এখন শুধুই সংখ্যায় পরিণত হয়েছি। হাজার হাজার মানুষ ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়েছে। তাদের উদ্ধারের কোন চেষ্টাও করা হয়নি। হয়তো কোনদিন উদ্ধার হবেও না।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসেবে প্রায় সাত মাসে ৩৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে ইসরাইলি হামলায়। যদিও স্থানীয়রা বলছেন, অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন ধ্বংসস্তুপের নিচে চাপা পড়ছে। তাদের উদ্ধারের কোন চেষ্টাও নেই। তাই নিহতের সংখ্যাতেও তাদের হিসেব যুক্ত করার সুযোগ নেই।
এতে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি বলে ধারণা গাজাবাসীর। তারা বলছেন, চোখের সামনে একটা পুরো পরিবারকে মরতে দেখলাম আজ। হামলায় একটা দুই বছর আর পাঁচ বছরের দুটো বাচ্চার শরীর থেকে মাথা ছিন্ন হয়ে গেছে। ওদের মা, বাবা সবাই মারা গেছে। চারপাশে বহু মানুষ পুরো পরিবার হারিয়ে নিস্ব হয়ে গেছে।
ইসরাইলি হামলায় প্রায় চার মাসে গাজার বেশিরভাগ অবকাঠামোই ধ্বংস হয়ে গেছে। উপত্যকাটির প্রায় সব বাসিন্দা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত। এ অবস্থায় যেসব প্যারাসুটের সাহায্যে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো গাজায় ত্রাণ ফেলছে, সেসব প্যারাসুট সংগ্রহ করে তা দিয়ে তাঁবু তৈরি করছেন সেখানকার মানুষজন।
তাদেরই একজন বললেন, রতাঁবুর জন্য প্যারাসুট সংগ্রহ করে আনা খুবই কঠিন একটি কাজ। অনেক সময় এগুলো সমুদ্রের মাঝখানে পড়ে। অনেকেই প্যারাসুটের কাছে যাওয়ার চেষ্টায় সমুদ্রের পানিতে ডুবে গেছে। তিনি জানান, পরিবারের জন্য তাঁবু তৈরির পর, অন্যদেরও তাঁবু বানিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করছেন।