রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চল সম্পূর্ণভাবে পুনর্দখলে নেওয়ার দাবি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। রুশ সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে এক ভিডিও কনফারেন্সে কুরস্ক পুনর্দখলের ঘোষণা দেন। তবে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা রাশিয়ার এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের সঙ্গে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর দেশটির পূর্ব ও দক্ষিণের কিছু অঞ্চল দখল করে নেয় রাশিয়া। এমন পরিস্থিতিতে ভবিষ্যতে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনার ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতে কুরস্কে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে চেয়েছিল কিয়েভ।
তবে, আট মাস আগে ইউক্রেনীয় সেনারা আকস্মিক পাল্টা অভিযানে রাশিয়ার এই ভূখণ্ডের দখলে নিয়েছিল। এরপর থেকেই কুরস্ক পুনর্দখলে অভিযান চালিয়ে আসছিলো রাশিয়া।
রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে একটি ভিডিও কনফারেন্সের সময় এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, রাশিয়ান সৈন্যরা ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে থাকা কুরস্কের শেষ গ্রাম গোর্নালকে মুক্ত করেছে।
এ সময় পুতিন বলেন, কিয়েভের অভিযান সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছে। ইউক্রেন সরকারের দুঃসাহসী অভিযান সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর কর্মীরা যারা রাশিয়ান ভূখণ্ডে লুকিয়ে থাকার চেষ্টা করছে তাদেরকে শনাক্ত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাদের অগ্রগতির ঘোষণা দিতে গিয়ে মস্কোর সেনাবাহিনীর চিফ অব স্টাফ উত্তর কোরীয় সেনাদের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, রণাঙ্গনে উত্তর কোরীয় সেনারা রাশিয়ার পক্ষে লড়াই করছেন। মস্কোর পক্ষ থেকে এ যুদ্ধে উত্তর কোরিয়ার সেনাদের ভূমিকার প্রথম আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি এটি।
তবে, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে এই দাবির বিরোধিতা করে বলেছে তাদের সৈন্যরা এখনও কুরস্কের কিছু অংশে যুদ্ধ করছে। ইউক্রেনের চিফ অফ স্টাফ বলেন, ইউক্রেনীয় সেনাদের পরাজয় সম্পর্কে শত্রুদের বক্তব্য প্রচারণার কৌশল ছাড়া আর কিছুই নয়।
তবে, তিনি স্বীকার করেছেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়ান বাহিনী সেখানে ধারাবাহিকভাবে অগ্রগতি অর্জন করেছে। ফলে সেখানে ইউক্রেনের জন্য পরিস্থিতি ‘কঠিন’ হয়ে পড়েছে।
এদিকে রাশিয়ার দাবি করা কুরস্ক পুনর্দখলের মধ্যেই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ভ্যাটিকানে পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার ফাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ‘সম্পূর্ণ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতির’ প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করেছেন।