বাংলাদেশে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ অস্থিতিশীলতা তৈরির জন্য সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন চালায় বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তবে সন্ত্রাসীদের দমন ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে স্বামী বিবেকানন্দ ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক সেমিনারে একথা জানান মন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশ কিছু সন্ত্রাসী গ্রুপ আছে। যারা সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতনের চেষ্টা করে। তারা অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে চায়। কিন্তু সরকার সতর্ক আছে।
‘বাংলাদেশে আগে ভারতবিরোধী মনোভাব ছিলো। যা বিএনপি-জামায়াত তৈরি করেছিলো। তবে এখন তা নেই,’ বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদি নেতা হিসেবে জনগণকে একসূত্রে গাথতে পেরেছেন। যার কৃতিত্ব এই দুই নেতার। শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের ভুমি কোনোভাবেই সন্ত্রাসীদের দখল করতে দেয়া হবে না। আমরা এখনো এটি বিশ্বাস করি ও মানি।
তিনদিনের দ্বিপাক্ষিক ভারত সফরে বর্তমানে নয়াদিল্লি রয়েছেন হাছান মাহমুদ। প্রথমদিনের তিনি দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ট্রানজিট কোনো এক দেশের স্বার্থ রক্ষা করে নয়। বাংলাদেশ যেনো লাভবান হয় তাও লক্ষ রাখতে হবে। বর্তমানের অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী বাংলাদেশ হচ্ছে ভারতের জন্য অপার সম্ভাবনা।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা শান্তিতে নেই- ভারতীয় এক সাংবাদিকের এই প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে সরকার সর্বত্র সজাগ রয়েছে।
‘জনসংখ্যা অনুপাতে বাংলাদেশে যে পরিমাণ পূজা মণ্ডপ হয়, ভারতে সেই তুলনায় কম হয়। এটাই প্রমাণ করে যে, সংখ্যালঘুরা বাংলাদেশে কতোটা ভালো রয়েছে,’ বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচনে ভারতের কোনো প্রভাব ছিলো না এবং বাংলাদেশও কোনো বলয়ে যোগ দেয়নি।
‘বাংলাদেশের জনগণ স্বাধীনভাবে নির্বাচন করেছে। ভারত আমাদের বন্ধু। তবে তাদের কোনো প্রভাব ছিলো না,’ বলেন তিনি
যোগাযোগ বিশেষ করে মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয় গুরুত্ব পাচ্ছে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে। এরপরও রয়েছে ভিসা পাওয়ার জটিলতা।
এদিনের সেমিনারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদও ভিসা প্রক্রিয়া কীভাবে সহজ করা যায় তার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা কখনোই ভিসাবিহীন যোগাযোগের কথা বলছি না। আমাদের লক্ষ্য ভিসা যেনো সহজ হয়। কাউকে যেনো লম্বা লাইনে দাঁড়াতে না হয়।
হাছান মাহমুদ বলেন, ভারত বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিসা দিয়ে থাকে বাংলাদেশিদের। এটা মানুষে মানুষে সংযোগের একটি উদাহরণ।
‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’ - বাংলাদেশ এই পররাষ্ট্রনীতিতে অটল থেকে সবার সাথে সমান বন্ধুত্ব রেখেছে বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ আরো বলেন, বাংলাদেশ আগেও ভারত থেকে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কিনেছে। ভবিষ্যতেও কিনবো এবং বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে।