কোটা আন্দোলনকারীরা স্লোগানে নিজেদের রাজাকার দাবি করায় আর কখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইবেন না বলে মন্তব্য করেছেন জনপ্রিয় লেখক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
এ বিষয়ে তার একটি লেখা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষের ওয়ালে ঘুরছে ওই লেখা।
মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীরের সন্তান জাফর ইকবাল লিখেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার বিশ্ববিদ্যালয়, আমার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আমি মনে হয় আর কোনোদিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইবো না, ছাত্র-ছাত্রীদের দেখলেই মনে হবে, এরাই হয়তো সেই রাজাকার।
তিনি আরও লিখেছেন, আর যে কয়দিন বেঁচে আছি, আমি কোনো রাজাকারের মুখ দেখতে চাই না। একটাই তো জীবন, সেই জীবনে আবার কেন নতুন করে রাজাকারদের দেখতে হবে?’
এ লেখার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে জাফর ইকবাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘হ্যাঁ, এটা আমি লিখেছি। আমার ওয়েবসাইট সাদাসিধে কথায় এটা পাবেন। এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত, অনুভূতি।
সাদাসিধে ডটকমে জাফর ইকবালের অসমাপ্ত লেখাটি আপলোড করা হয়েছে। সেই লেখার ইতি টানা হয়েছে তার এই অভিমানের কথা প্রকাশ করে।
আর নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ রাখার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, আমি এই লেখাটি লিখতে শুরু করেছিলাম। শেষ করার আগেই জানতে পারলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটাবিরোধী ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের রাজাকার হিসেবে ঘোষণা দিয়ে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় প্রকম্পিত করেছে। এই লেখাটি শেষ করার আর কোনো প্রয়োজন নেই।
মুহম্মদ জাফর ইকবাল বাংলাদেশের তুমুল জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক ও বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখক। এছাড়া একাধারে তিনি কলাম লেখক, পদার্থবিদ, শিক্ষাবিদ ও আন্দোলনকর্মী।
তার বাবা ফয়জুর রহমান ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার ও এদেশীয় দোসরদের হাতে শহীদ হন। তার বড় ভাই হুমায়ুন আহমেদ ছিলেন বাংলা ভাষার সর্বকালের শ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় উপন্যাসিকদের একজন।
সম্প্রতি কোটা নিয়ে আন্দোলন করছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে গত রোববার সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে এতো ক্ষোভ কেন? মুক্তিযোদ্ধার নাতিনাতনিরা (কোটা) পাবে না, তাহলে কি রাজাকারের নাতি-পুতিরা পাবে?
প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করে আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্লোগান দেন যে, ‘তুমি কে, আমি কে/ রাজাকার, রাজাকার।’
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম জনপ্রিয় স্লোগান ‘তুমি কে, আমি কে/বাঙালি, বাঙালি’ স্লোগানকে এভাবে উপস্থাপন করায় কোটা নিয়ে আন্দোলনকারীরা সমালোচনার মুখে পড়েছে।