ধর্ষণ হলো নারীর প্রতি সহিংসতার চূড়ান্ত অপরাধ। তাই নিপীড়ন নির্যাতন বা শ্লীলতাহানি’র মতো শব্দগুলো দিয়ে এই অপরাধকে কখনও প্রতিস্থাপন করা যাবে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরাধের ভয়াবহতাকে নতুন শব্দের আড়ালে চাপা দিতে চাইলে বরং দায় মুক্তির বোঝাই বাড়বে। আইনজীবীরাও বলছেন, অপরাধের মাত্রা বোঝাতে ধর্ষণ ব্যতীত অন্য শব্দ ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই।
গণমাধ্যম থেকে শুরু করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুললেই ভেসে ওঠে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের খবর। যা মানুষকে আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ করে তুলছে। তাই ধর্ষণের পরিবর্তে অন্য কোন শব্দ দিয়ে এই অপরাধকে নির্দিষ্ট করা যায় কিনা; এমন প্রশ্ন উঠেছে। ধর্ষণ শব্দ পরিহারের অনুরোধ আসে পুলিশ থেকেও।
এই নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে শেষ পর্যন্ত বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন নগর পুলিশ প্রধান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধর্ষণ এমন এক অপরাধ যা; নিপীড়ন নির্যাতন বা শ্লীলতাহানি’র মতো শব্দগুলো দিয়ে কখনও প্রতিস্থাপন করা যায় না। তাই ধর্ষণকে ধর্ষণই বলতে হবে। এর কোর বিকল্প নেই।
সমাজে এখনও ভুক্তভোগীর বদলে ক্ষমতাধর অপরাধীকে সুরক্ষা দেয়ার প্রবণতা দেখা যায়। যা অপরাধের দায়মুক্তি ও অপরাধীকেই উল্টো শক্তিশালী করে তোলে বলে মনে করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি মনে করেন, ধর্ষণ মাধ্যমে অপরাধের মাত্রাই প্রকাশ হয়, অন্য কিছু নয়।
দুই হাজার সালে সংশোধিত নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৮নং ধারায় ধর্ষণের সংজ্ঞা ও ধর্ষণজনিত কারণে মৃত্যুর শাস্তি উল্লেখ করা আছে। তাই ধর্ষণকে ধর্ষণ উল্লেখ না করে নির্যাতন বলা হলে মামলাটি দুর্বল হবে। অপরাধীরা শাস্তির বাইরে থেকে যাবে বলে মনে করেন আইনজীবী কামরুন নাহার মাহমুদ দীপা।
যেখানে ধর্ষণ উল্লেখ থাকার পরাও বিচার বিলম্বিত হচ্ছে। হাজার হাজার মামলা আছে বিচারের অপেক্ষায়। সেখানে ধর্ষণ শব্দটি আড়াল করা হলে ন্যায় বিচার না পাবার শঙ্কা থাকবে বলে মনে করছে সবাই।