ভোটারের আস্থা ও বিশ্বাসযোগ্যতাই নির্বাচনের প্রধান বিষয়। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে দলগুলোর পোলিং এজেন্টরাই ভোটের অন্যতম পর্যবেক্ষক। এ কারণেই ৯৫ কোটি ভোটারের আস্থা পেয়ে আসছে ভারতের নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি দিল্লিতে বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে এসব কথা বলেন ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার।
সিংহের অভয়ারণ্য গুজরাটের গির ন্যাশনাল পার্ক। বনের ৩৫ কিলোমিটার ভেতরে এক মন্দিরে থাকেন পুরোহিত ভারত দাস। সেখানে তিনিই একমাত্র ভোটার। প্রতিটি নির্বাচনে গহীন সেই বনে গিয়ে তার ভোট গ্রহণ করে ভারতের নির্বাচন কমিশন। এ জন্য ভোটের আগের দিন পাঁচ সদস্যের একটি নির্বাচনী দলকে পাড়ি দিতে হয় সেই বন।
চীন সীমান্তের কাছে দুর্গম পাহাড়ে ঘেরা অরুণাচলের মালোগ্রাম। সেখানে থাকেন একমাত্র নারী ভোটার সোকেলা তাই আং। পুরো পথ পায়ে হেঁটে তার ভোট গ্রহণ করে আরেকটি নির্বাচনী দল। এভাবেই প্রয়োজনে একজন একজন করে হলেও ৯৫ কোটি ভোটারের ভোট নিশ্চিত করে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার বলেন, যত দুর্গম এলাকাই হোক না কেন, প্রতিটি ভোটারকে ভোট দানের সুযোগ দিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ নির্বাচন কমিশন। দল দেখে নয় আগে আবেদনের ভিত্তিতে সভা-সমাবেশের সুযোগ পায় রাজনৈতিক দলগুলো। ভোট কেন্দ্রগুলো সিসি ক্যামেরাসহ অনলাইনে সংযুক্ত থাকে। তাই ভোটের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা নিয়ে ভারতের কোনো নির্বাচন আজও প্রশ্নবিদ্ধ হয়নি।
সম্প্রতি দিল্লী সফররত বাংলাদেশি সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় কালে ভারতের সিইসি বলেন, বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য কমিশনের যাবতীয় কার্যক্রম রাজনৈতিক দল ও গণমাধ্যমের কাছ প্রকাশ করতে হয়। দলগুলোর নেতাদের সামনেই ইভিএম মেশিন যাচাই বাছাই করা হয়।
রাজীব কুমার আরও বলেন, শতভাগ স্বচ্ছতার জন্য পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিলে ইভিএমের সাথে থাকা মনিটরে ভেসে আসে ওই প্রার্থী, দলের নাম ও প্রতীক। ভোটে কোনো অনিয়ম হলে যে কেউ ছবি তুলে কমিশনের ওয়েব সাইটে দিলে একশ মিনিটের মধ্যেই ব্যবস্থা নেয় কমিশন। নির্বাচন পরবর্তী ৪৫ দিন পর্যন্ত ইভিএম ও ব্যালট সংরক্ষণ করা হয়।
ভারতের সিইসি বলেন, নির্বাচনে অংশ না নিলে অস্তিত্ব বিলীন হবে এমন মনোভাব ভারতের রাজনৈতিক দলগুলোর। ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ভোট পড়লেই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে বলে ধরা হয় জানান রাজীব কুমার।
একাত্তর/আরবিএস