অর্থ পাচার ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে এবার শেখ হাসিনাসহ শেখ পরিবারের ১০ সদস্যের জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি বন্ধ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশনের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুবিভাগ।
সোমবার (২১ এপ্রিল) নির্বাচন কমিশন সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। একই অভিযোগে আওয়ামী লীগ অন্য নেতাদের এনআইডিও বন্ধ করা হতে পারে বলে জানিয়েছেন কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
ইসি সূত্রটি জানায়, এর ফলে নাগরিকত্ব বা ভোটাধিকার না হারালেও এনআইডি সম্পর্কিত সরকারি-বেসরকারি কোনো ধরনের সেবা নিতে পারবেন না।
যাদের এনআইডি লক করা হয়েছে তারা হলেন- শেখ হাসিনা, সজীব আহমেদ ওয়াজেদ, সায়মা ওয়াজেদ, শেখ রেহানা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক, শাহিন সিদ্দিক, বুশরা সিদ্দিক, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং তারিক আহমেদ সিদ্দিক।
সূত্রটি জানায়, জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীরের মৌখিক নির্দেশনায় মাস দুয়েক আগে তাদের এনআইডি ‘লক’ করা হয়েছে। হুমায়ুন কবীর বর্তমানে এনআইডি নিবন্ধন নিয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরে রয়েছেন।
এনআইডি লক হলে কী হয়
ইসি সূত্র জানায়, এনআইডি লক হলে কখনোই নাগরিকত্ব হারায় না। কারো এনআইডি লক হলেও ভোটার তালিকায় তার নাম থাকে। তবে এনআইডি সম্পর্কিত সরকারি-বেসরকারি সব সেবা থেকে বঞ্চিত হয়।
জাতীয় পরিচয়পত্রে মেলে যেসব সেবা
দেশে ২২ ধরনের সেবা পেতে লাগে জাতীয় পরিচয়পত্র। এর মধ্যে রয়েছে- আয়করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর পাওয়া, শেয়ার আবেদন ও বিও হিসাব খোলা, ড্রাইভিং লাইসেন্স করা ও নবায়ন, ট্রেড লাইসেন্স করা, পাসপোর্ট করা ও নবায়ন, যানবাহন রেজিস্ট্রেশন, চাকরির আবেদন, বিমা স্কিমে অংশগ্রহণ, স্থাবর সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয়, বিয়ে ও তালাক রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক হিসাব খোলা, নির্বাচনে ভোটার শনাক্তকরণ, ব্যাংকঋণ, গ্যাস-পানি-বিদ্যুতের সংযোগ, সরকারি বিভিন্ন ভাতা উত্তোলন, টেলিফোন ও মোবাইলের সংযোগ, সরকারি ভর্তুকি, সাহায্য ও সহায়তা, ই-টিকেটিং, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি, আসামি ও অপরাধী শনাক্তকরণ, বিজনেস আইডেনটিফিকেশন নম্বর পাওয়া ও সিকিউরড ওয়েব লগে ইন।
সেই হিসেবে শেখ হাসিনা পরিবারের যাদের এনআইডি লক হয়েছে, তারা এই সুবিধাগুলো পাবেন না।
এর আগে দুদকের করা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১১ মার্চ শেখ হাসিনা, তার পরিবার ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং আওয়ামী লীগের নামে ১২৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন ঢাকার আদালত।