রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত।
মঙ্গলবার (৬ মে) এ সংক্রান্ত বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদনের শুনানি নিয়েসুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত এ আদেশ দেন।
আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী এম কে রহমান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও আরশাদুর রউফ।
এর আগে একই দিন চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া আরও চারটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে।
সকালে তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের ওপর শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ষষ্ঠ আদালতের বিচারক এসএমএম আলাউদ্দিন মাহমুদ চিন্ময়কে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর সেশন জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌসলি মফিজুল হক ভুঁইয়া জানান, রাষ্ট্রীয় কাজে বাধা, হত্যার হুমকি, ভাঙচুর ও বিস্ফোরণের ধারায় হওয়া চারটি মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেপ্তারের আবেদন করেছিল তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে বিচারক তাকে মামলাগুলোতে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে সোমবার একই আদালত আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায়ও চিন্ময়কে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছিল।
গত সপ্তাহের বুধবার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন প্রথমে স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। পরে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়ে জামিন স্থগিতের আবেদন পুনরায় শুনানির জন্য নতুন দিন ঠিক করা হয়। সেদিন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা বলেছিলেন, চেম্বার বিচারপতি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি আসামির আইনজীবীর বক্তব্য শুনবেন। তারপর আদেশ দেবেন।
ওইদিন চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে জামিন দেন হাইকোর্ট। কিছুক্ষণের মধ্যেই জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
গত ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণের জামিন নাকচকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় সংঘর্ষ চলাকালীন নিহত হন আইনজীবী সাইফুল।
এ ঘটনায় পর হত্যাসহ বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের হয় চটগ্রামের কোতোয়ালি থানায়।
গত বছরের ২৫ নভেম্বর বিকেলে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে যাওয়ার সময় শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে চিন্ময়কে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
এর আগে গত ৩০ অক্টোবর জাতীয় পতাকা অবমানার অভিযোগ এনে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
গত ৩০ এপ্রিল রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন হাইকোর্ট মঞ্জুরের পর তা স্থগিত করে চেম্বার আদালত। পরে ওই স্থগিত আদেশ প্রত্যাহারে করে শুনানির দিন ঠিক করা হয়। ওই শুনানিতে চিন্ময়কে গ্রেপ্তারের আদেশ দেওয়া হয়।
তার আগে, চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন প্রশ্নে রুল শুনানির জন্য ৩০ এপ্রিল দিন ঠিক করেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ এপ্রিল হাইকোর্টের বেঞ্চ শুনানি মুলতবি করেন।
তারও আগে চার ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলী রেজার দ্বৈত বেঞ্চ রাষ্টদ্রোহ মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে কেন জামিন দেওয়া হবে না জানতে রুল জারি করেন।