জনগণের ভোগান্তি কমাতে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। পাশাপাশি জুলাই আন্দোলনে হত্যাকারীদের বিচার, সংস্কার ও জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ এক সঙ্গে ঘোষণার দাবি জানিয়েছে দলটি।
শনিবার (২৪ মে) দুপুরে দলটির কার্যালয়ে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন আহবায়ক নাহিদ ইসলাম।
এসময় তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার কী শুধু নির্বাচনকালীন সরকার, নাকি গণঅভ্যুত্থানের সরকার। রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং বিচারের মধ্য দিয়েই নির্বাচনের দিকে যেতে হবে। সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচন এই তিনটিরই সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ তৈরি করা উচিত। তবে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দিকে যাওয় উচিত। তাহলে মানুষের দুর্ভোগ দূর হবে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলোকে রাষ্ট্র ও জনগণের প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুনর্গঠন করলে ভালো হবে।
এর আগে ২০ মে বাংলামোটরে দলটির অস্থায়ী কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন নাহিদ বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে। তাদের কাজে ভরসা নাই। তাই দ্রুত ইসি পুনর্গঠন করতে হবে।
শনিবারের সাংবাদিক সম্মেলেনও ইসি নিয়ে আগের মন্তব্যই করেন তিনি। বলেন, ইসি আস্থা ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। হয় তারা আস্থা ফিরিয়ে আনবেন, না হয় দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে।
এদিকে ২২ মে গণঅভ্যুত্থানের পরে সেনানিবাসে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের তালিকা প্রকাশ করেছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
এ ব্যাপারে নাহিদ বলেন, তালিকাটা আরও আগে প্রকাশ করা উচিত ছিলো। সেনাবাহিনী এখন যে ভূমিকা রাখছে তা গুরুত্বপূর্ণ। তবে অতীতে ১/১১ সহ বিভিন্ন ঘটনা সেনাবাহিনীসহ আমাদের কারো জন্যই ভালো ফল বয়ে আনেনি। এজন্য যার যে দায়িত্ব, তাকে সেইটা পালন করতে হবে।
যারা গুমের ঘটনায় জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে সেনাবাহিনীর আস্থা আর বাড়বে বলেও মনে করেন নাহিদ।
এদিকে দুই ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি জানিয়ে আসছে কয়েকটি রাজনৈতিক দল।
অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনতে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। সরকারের মধ্যে নতুন দলের কয়েকজন রয়ে গেছেন অভিযোগ করে তিনি বলেন, এই দলের প্রতি আমাদের অনেক আশাবাদ ছিল। তাদের দুজন উপদেষ্টা এই সরকারে থেকে অনেক কিছুতে হস্তক্ষেপ করছে।
অপরদিকে ওই দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছে গণঅধিকার পরিষদও। দলটির নেতাদের ভাষ্য, এই দুই উপদেষ্টা এনসিপির এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন।
তবে অভিযোগগুলো অস্বীকার করে নাহিদ বলেন, দুই ছাত্র উপদেষ্টার সঙ্গে এনসিপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তাদের রাজনীতি করতে হলে ওই পদ ছেড়ে এসে করতে হবে। এনসিপির সঙ্গে তাদের জড়িয়ে পদত্যাগ চাওয়া উদ্দ্যেশ্যমূলক। সরকার থেকে বের হবে কিনা সেটা তাদের সিদ্ধান্ত। তাদের এনসিপির সঙ্গে সম্পৃক্তা দেখিয়ে হেয় করা হচ্ছে। আমরা এর নিন্দা জানাচ্ছি।
নাহিদ বলেন, গণ অভ্যুত্থানেট স্পিরিট বাস্তবায়নে দুই উপদেষ্টাসহ সব উপদেষ্টা দায়িত্ব পালন করবেন, এটা আমাদের চাওয়া।