দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে বিশ্বমানের ক্রিকেটার থাকলেও, খেলাটা ব্যাট-বলের।
আর সেই কথা স্মল করিয়ে দিয়ে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার
বিপক্ষে তারা আক্রমণাত্মক ক্রিকেটই খেলতে চান। সেভাবেই প্রস্তুতি নিয়েছে টাইগাররা।
বৃহস্পতিবার সিডনিতে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। এর আগে ডাচদের বিপক্ষে জয়ে ফেরায় স্বস্তি ফিরিছে বাংলাদেশ শিবিরে। যে জয়ের জন্য দীর্ঘ ১৫ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে সেই জয় এসেছে হোবার্টে। তাই স্বস্তির হাওয়া বইছে ক্রিকেটারদের মাঝে।
এক ম্যাচ শেষে বি- গ্রুপে দুই পয়েন্ট ও ০.৪৫০ রান রেট নিয়ে সবার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। সমান পয়েন্ট নিয়ে ০.০৫০ রান রেটে দ্বিতীয় অবস্থানে ভারত। এছাড়াএক পয়েন্ট নিয়ে তিনে জিম্বাবুয়ে ও চারে রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
এমন আবস্থানে থেকেই দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামছে সাকিবের দর। ম্যাচটি হবে সিডনিতে, যেই শহরটিতে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি বাস করেন। তাই অস্ট্রেলিয়ার অন্য ভেন্যু থেকে এখানে গ্যালারির সমর্থনটা বেশি পাবে বাংলাদেশ। যা হিসাবে রাখছেন সাকিব নিজেও।
বুধবার সিডনিতে ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আল হাসান বলেন, দর্শকদের সমর্থন পেলে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেই শক্তি তাদের তাতিয়ে দিতে পারে। তবে গেম প্লান নিয়ে তিনি কোন কথা বলতেই রাজি হননি সাংবাদিকদের সঙ্গে। গোপনই রাখতে চেয়েছেন তিনি।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলেও বৃষ্টি আইনে পয়েন্ট হারিয়েছে প্রোটিয়ারা। এতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটি তাদের জন্য হয়েছে বাঁচা মরার লড়াই। চাপে থাকা প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সেদিক থেকে একটা সুযোগ দেখছেন সাকিব।
তিনি বলেন, ওদের বেশ কিছু বিশ্বমানের খেলোয়াড় আছে, সেটা আমরা অস্বীকার করছি না। কিন্তু আমাদের খেলা হবে ব্যাটে ও বলে। সেখানে আমরা চেষ্টা করব ভালো পারফর্ম করার। ওদের বিপক্ষে আমাদের কিছু ভালো স্মৃতি আছে, হয়ত অন্য সংস্করণে।
সাকিব আরও বলেন, সেগুলো আমাদের মানসিকভাবে সাহায্য করবে। আমরা খেলাটা উপভোগ করতে চাই। আমি আশা করি বেশ ভালো সংখ্যক মানুষ আসবে, যারা আমাদের সমর্থন করবে। তাদের সমর্থনের প্রতিদান যেন আমরা দিতে পারি।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে এখন অব্দি কোনও জয় নেই টাইগারদের। সেই অঙ্কে সিডনির ম্যাচটি নানা সমীকরণেও হাজির হতে হবে। ম্যাচে কোন বিশেষ পরিকল্পনা আছে কি, এমন প্রশ্নের উত্তরে হেসে সাকিব জানিয়ে দেন, তিনি এনিয়ে কিছুই বলবেন না।
টাইগার দলপতি জানান, টস তো আমাদের হাতে নেই। ম্যাচটা যেহেতু জেতার জন্য খেলতে নামবো, আগে ব্যাটিং কিংবা বোলিং যা-ই করি, ভালো করার চেষ্টা করবো। দক্ষিণ আফ্রিকার জন্যও ম্যাচটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় বাঁচা-মরার ম্যাচ। তাই ওরা একটু হলেও চাপে থাকবে।
আর সিডনির মাঠে টাইগাররা খেলতে বেশি স্বাছন্দ্যে বোধ করবে সেই কথা জানিয়ে সাকিব বলেন, এই মাঠে অস্ট্রেলিয়ার যে কোনো উইকেটের চেয়ে এখানে (সিডনি) সাধারণত স্পিনারদের জন্য সুবিধাটা বেশি থাকে।
তিনি বলেন, আমি এটা আশা করছি, বৃহস্পতিবার আমাদের জন্য আরেকটা সুযোগ। আমাদের ১১ জনের যারা খেলবে তাদের মধ্যে একজনের হিরো হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তো ওই হিরোটা কে হবে সেটাই দেখার। ওগুলোই আমাদের কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে কাজ করে।
কে হতে পারেন সেই হিরো? নির্দিষ্ট করে কারও নাম বলতে রাজি নন সাকিব। যার সামনে যে সুযোগ আসবে সেটি কাজে লাগানোর মানসিকতার তাগিদ দিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। খোলা মনে খেলা উপভোগ করার কথা বললেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
সাকিব আল হাসান বলেন, ওপেনারদের সুযোগ আছে ২০ ওভার ব্যাটিং করার। কেন তারা পারবে না? আমি বিশ্বাস করি তারা করতে পারবে। কিংবা আমাদের বোলাররা যেভাবে বোলিং করেছে আগেরদিন, কেন আমরা আবার ১০ উইকেট নিতে পারব না।
আরও পড়ুন: পায়রা বন্দরের উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন বৃহস্পতিবার
তিনি আরও যোগ করেন, আমাদের চিন্তাটাই থাকবে ওরকম। আমরা খোলা মন নিয়েই যেতে চাই, খেলাটা উপভোগ করতে চাই, আক্রমণাত্মক থাকতে চাই। অবশ্যই রোমাঞ্চকর ক্রিকেট খেলতে চাই এবং দিন শেষে হাসিমুখে ফিরে আসতে চাই।
চমকের উপর খুব বেশি ভরসা না করার আহবান জানিয়ে সাকিব বলেন, চমকে দেওয়ার মতো কিছু হলে সেটা তো চমকই হলো। কিছু কিছু ব্যতিক্রম থাকে যেটা উদাহরণ হতে পারে না। উদাহরণ হলো যখন দলগতভাবে পারফর্ম করছে, কেউ না কেউ প্রতিদিন পারফর্ম করছে।
তিনি বলেন, যদি দু’একটা ব্যতিক্রমী পারফরম্যান্স হয় সেটাকে আমরা সাদরে গ্রহণ করবো। আমরা চাইবো প্রতি ম্যাচেই এমন দু’একটা ব্যতিক্রমী পারফরম্যান্স হোক। যেটা খেলার মোড় ঘুরিয়ে দেয় অনেক বেশি। বিশেষ করে এটা যেহেতু অনেক ছোট একটা সংস্করণ।
একাত্তর/আরবিএস