আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন আইএসএস একাধিক দেশের মহাকাশ সংস্থার সহযোগিতার
ফসল। তিলে তিলে সেটির অংশ বিশেষ গড়ে তোলা হয়েছে। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পাশাপাশি
সেখান থেকে পৃথিবীর অপূর্ব দৃশ্যও বাড়তি আকর্ষণ।
৪০০ কিলোমিটার উচ্চতায় প্রতি ৯০ মিনিটে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন আইএসএস পৃথিবী প্রদক্ষিণ করে চলেছে। যেখানে বিভিন্ন দেশের মহাকাশচারী গবেষণা চালান। মাধ্যাকর্ষণ শক্তির গণ্ডির বাইরে তারা এমন সব পরীক্ষা চালান, যা পৃথিবীর বুকে অসম্ভব হতো।
বিশ বছরেরও বেশি সময় ধরে সহযোগিতার ফল হিসেবে এই মহাকাশ স্টেশন তৈরি
করা সম্ভব হয়। কিন্তু ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধ সেই সহযোগিতাকে হুমকির মুখে ফেলছে।
১৯৯৮ সালে রুশ-মার্কিন চুক্তির মাধ্যমে এই উদ্যোগের সূচনা হয়। শীতল যুদ্ধের সময় দুই দেশ পরস্পরের শত্রু ছিল। তারপর নতুন কিছু সৃষ্টি করতে চেয়েছিল এই দুই শক্তি।
সেই বছরেই রাশিয়ার একটি রকেট পৃথিবীর কক্ষপথে স্থাপন করে। এর পরপর আমেরিকাও আরেকটি মহাকাশযান একই কক্ষপথে মিলিত হয়ে তৈরি করে আইএসএস।
সের্গেই ক্রিকালইয়ভ ও ইয়ুরি গিডসেনকো নামের দুই রুশ মহাকাশচারী বিল
শেপার্ড নামের মার্কিন মহাকাশচারীর সঙ্গে ২০০০ সালের অক্টোবর মাসে মহাকাশে পাড়ি দেন।
তারাই ছিলেন আইএসএস-এর প্রথম আরোহী।
এরপর আইএসএস আরো বড় হতে থাকে। ১৬টি দেশ একাধিক রকেট তৈরি করে। ২০১১ সালে নাসা আনুষ্ঠানিকভাবে আইএসএস নির্মাণের কাজের সমাপ্তি ঘোষণা করে।
বর্তমানে আইএসএস প্রায় একটি ফুটবল স্টেডিয়ামের মতো বড় এবং প্রায় ৪২০ টন ভারি হয়ে উঠেছে। সাত জন মানুষ দীর্ঘ সময় ধরে সেখানে কাজ করতে পারে।
ইতোমধ্যে ২৪০ জনেরও বেশি মহাকাশচারী আইএসএস-এ বাস করে মাধ্যাকর্ষণহীন পরিবেশের স্বাদ পেয়েছেন।
মহাকাশচারীরা সেখানে তিন হাজারের বেশি পরীক্ষা চালিয়েছেন এবং মহাকাশে বাস করার বিষয়ে অনেক নতুন জ্ঞান অর্জন করেছেন।
একাত্তর/এসএ