কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বা এআইয়ের বিস্তারের কারণে যারা চাকরি হারাচ্ছেন বা হারাবেন, তাদেরকে পরবর্তী চাকরি পাওয়ার আগ পর্যন্ত ভাতার ব্যবস্থা করা উচিত বলে মনে করেন এ খাতের সংশ্লিষ্টরা।
একই সঙ্গে দেশের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আইন প্রণয়নের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা যেনো প্রচলিত আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক না হয় সেদিকেও নজর রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আইন প্রণয়নের নিমিত্ত প্রারম্ভিক অংশী জন’ সংলাপে এসব পরামর্শ আসে।
সংলাপে অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞরা বলেন, বাংলাদেশের জন্য এআইয়ের একটা বড় ঝুঁকি আছে। নৈতিকতা, সংস্কৃতি, ধর্মীয় ও জাতীয় মূল্যবোধ বিবেচনায় নিয়ে আইন প্রণয়ন করা জরুরি।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আইনের নাম প্রাথমিকভাবে নাম দেয়া হয়েছে ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আইন-২০২৪’।
এইআইয়ের সম্ভাবনাগুলোকে সুষ্ঠুভাবে ব্যবহারের জন্য এই আইন জরুরি বলেও জানান তিনি।
গুগলের জেমিনি বা মাইক্রোসফটের চ্যাটজিপিটির মতো এআইগুলো এখন বিশ্বের আলোচিত বিষয়। লেখালেখি থেকে শুরু করে প্রশ্নোত্তর, গ্রাফিক্যাল উপস্থাপনাসহ নানা ধরনের সৃষ্টিশীল কাজ এখন এআই দিয়েও করা হচ্ছে।
আর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দ্রুত জনপ্রিয়তার মধ্যে এর নিয়ন্ত্রণেও বিভিন্ন দেশ উদ্যোগী হয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও পশ্চিমা উন্নত দেশগুলোও এআইকে নিয়ন্ত্রণে আইন করার উদ্যোগ নিয়েছে।
সম্প্রতি আনিসুল হক বলেছেন, সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই বিষয়ে একটা ড্রাফট (খসড়া) করা হবে। সেখানে কী কী থাকবে, তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
এদিনের অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, উদ্ভাবন, অনুশাসন ও সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আইন প্রণয়ন করতে চায় সরকার।
অনুষ্ঠানে মাইক্রোসফটের কান্ট্রি ডিরেক্টর জানান, শ্রীলংকায় অষ্টম শ্রেণীর পাঠ্যক্রম থেকেই এআই বিষয়ে পড়ানো হয়। বাংলাদেশের শিক্ষাক্রমেও এটা থাকা উচিত।
আর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আইনের প্রণয়ন ও প্রয়োগের আগে সাধারণ মানুষের কাছে এই প্রযুক্তি সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা জরুরি বলেও মনে করেন তিনি।
‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আইন ২০২৪’ –প্রণয়নের আগে এর খসড়ার ওপর এই প্রথম অংশীদারদের মতামত নেয়া হলো। এদিন প্রায় ২৬ জনের মতামত নেয়া হয়।