ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ যুবকদের একাংশ
দালালদের খপ্পরে পড়ে ইতালি যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে স্পিডবোট ডুবিতে নিখোঁজ ২৮ জনের মধ্যে ১৫ জনই নরসিংদী জেলার বাসিন্দা। সেখানকার দুই উপজেলার ছয় ইউনিয়নের সেই ১৫ যুবকের বাড়িতে এখন চলছে আর্তনাদ আর আহাজারি।
ঘটনার ৩৫ দিন পেরিয়ে গেলেও তাদের কোন সন্ধান না পাওয়ায় ধারনা করা হচ্ছে, তাদের সবারই সলিল সমাধি হয়েছে।
এ ঘটনায় জড়িত দালালদের বিচারের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরিবার ও এলাকাবাসী। এদিকে দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: একই শ্রমে পুরুষের তুলনায় এখনো নারীর মজুরি কম
চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি দালালদের খপ্পরে পড়ে লিবিয়া থেকে স্পিডবোটে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাচ্ছিলেন অভিবাসন প্রত্যাশী ৩৫ জন বাংলাদেশি। ইতালি পৌঁছানোর ঘণ্টাখানেক আগে মাল্টা সীমানার জলরাশিতে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই স্পিডবোটটি উল্টে গেলে সব যাত্রী ডুবে যান।
প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় ১১ ঘণ্টা ভেসে থাকার পর কোস্টগার্ডের সদস্যরা জীবিত সাতজনকে উদ্ধার করেন। তবে তীরে পৌঁছার আগেই ঠাণ্ডায় জমে একজনের মৃত্যু হয়।
স্বজনদের অভিযোগ, লিবিয়ায় মানবপাচার চক্রের মূলহোতা মনির শিল ও বাংলাদেশে তার সহযোগী তারেক দালালের কারণেই ১৫ যুবকের এই করুণ পরিণতি।
ভূমধ্যসাগরে নিখোঁজ যুবকেদের একাংশ
সলিল সমাধির হাত থেকে বেঁচে ফেরা ছয়জনের মধ্যে দু’জন গত বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ) দেশে ফিরেছেন। তাদের একজন নরসিংদীর রায়পুরার মো. খোরশেদ মৃধার ছেলে ইউসুফ মৃধা। বিভীষিকাময় নানা ঘটনার কথা জানান তিনি।
তবে পুলিশ বলছে, দীর্ঘদিন ধরে আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্র অবৈধভাবে তাদের অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সাহেব আলী পাঠান।
এ ঘটনায় নিখোঁজ আশিষ এর বাবা অনিল সূত্রধর রায়পুরা থানায় তারেক মোল্লা, মামুন মোল্লা ও সুবল চন্দ্র শীলকে আসামি করে অজ্ঞাত ৫-৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে এই মানব পাচারকারী চক্রের সদস্য মামুন মোল্লা (৩৯) ও সুবল চন্দ্র শীলকে (৪৫) গ্রেপ্তার করে নরসিংদী জেলা পুলিশ।