শেরপুরের ঝিনাইগাতীর সীমান্ত থেকে আবারও একটি বন্য হাতির মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) বিকেলে উপজেলার পর্যটন কেন্দ্র গজনী অবকাশের শেষ ভারত-বাংলাদেশ সীমানার বেরবেরী এলাকা থেকে এ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
তবে, সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় ও বন্য হাতির বিচরণের কারণে শুক্রবার (৩ জুন) হাতিটির ময়নাতদন্ত করা হবে।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গজনী অবকাশের বেরবেরী এলাকার শেষ সীমানায় ১১০১ নং পিলারের কাছে একটি বন্য হাতির মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে বন বিভাগ, প্রাণী সম্পদ দপ্তরের কর্মকর্তা, বিজিবি ও পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মৃত বন্য হাতিটির পেট ফুলে গেছে ও শরীর থেকে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। এছাড়া হাতির পিঠে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। পাশাপাশি হাতির দাঁত কে বা কারা খুলে নিয়ে গেছে। হাতিটি কিভাবে মারা গেছে তা জানা যায়নি।
তবে এলাকাবাসী ও প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাদের ধারণা, ভারতের মেঘালয়ে বল্লম (দেশিয় অস্ত্র) দিয়ে হাতিটিকে আঘাত করা হয়েছে, পরে বাংলাদেশে এসে এটি মারা গেছে। হাতিটি হয়তো কয়েকদিন আগেই মারা গেছে বলে ধারণা তাদের।
প্রকৃতি ও পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন বলেন, গারো পাহাড়ে একের পর এক হাতির মৃত্যু ও হত্যার ঘটনা ঘটেই চলছে। এসব হাতিকে নানা উপায়ে হত্যা করা হলেও এদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
শুধুমাত্র একটি হাতি হত্যায় মামলা করা হলেও বাকীগুলোর বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যে কারণে, গারো পাহাড়ে হাতি হত্যা থামছে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ঝিনাইগাতী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. সাদিয়া আফরিন বলেন, বন্য হাতিটি পুরুষ, আনুমানিক বয়স ১৫-২০ বছর হতে পারে। হাতিটি যেকোন অস্ত্রের আঘাতের কারণে মারা যেতে পারে, কারণ হাতিটির পিঠে বড় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, পাশাপাশি হাতিটির দাঁত কে বা কারা খুলে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে ময়নাতদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে। এ বিষয়ে বন বিভাগের বাদী হয়ে মামলা করার পরামর্শ দেন তিনি।
বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, হাতিটি কিভাবে মারা গেল তা তদন্ত করে দেখার পর প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ছয় মাসে শেরপুর জেলায় চারটি হাতির মৃত্যু হয়েছে।
একাত্তর/এসজে