রাত পোহালেই বরিশাল ও খুলনা মহানগরের নির্বাচন। সোমবার সকাল আটটা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হবে। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। এরই মধ্যে এরমধ্যে দুই মহানগরেই পৌঁছেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম।
খুলনার সোনাডাঙ্গা মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স থেকে ইভিএম মেশিনসহ নির্বাচনী সামগ্রী বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। ১৮৯টি কেন্দ্রের এক হাজার ৭৩২টি বুথের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং এবং পোলিং কর্মকর্তারা বুঝে নিয়েছেন নির্বাচনী বিভিন্ন সরঞ্জাম।
নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপুর্ণ করতে ৩১ টি ওয়ার্ডের ৩১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি মোতায়েন থাকবে ১১ প্লাটুন বিজিবি।
খুলনায় যেন অসম এক লড়াই! যেন নির্ভার ও নিরুত্তাপ! মিরাকেল কিছু না হলে এই সিটিতে নৌকার জয় প্রায় নিশ্চিত! নানা সমীকরণ মিলিয়ে এমনটাই আভাস ভোটার ও বিশ্লেষকদের। তবে, বিএনপিবিহীন ভোটে নৌকার প্রতিদ্বদ্বি চার প্রার্থী আদৌ কি প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারবেন? কারা পাবেন নতুন ভোটারদের ভোট; এটাই এখন দেখার পালা।
খুলনা সিটিতে নতুন ভোটার প্রায় ৪০ হাজার। জয়-পরাজয়ের অন্যতম নির্ধারক তারাই। তবে, নতুন ভোটার ছাপিয়ে এবার মূল ফ্যাক্টর ‘বিএনপির ভোট’। ২০১৩ ও ২০১৮ সালের সিটি নির্বাচনে বিএনপির মেয়র প্রার্থীরা লাখের উপর ভোট পেয়েছিলেন। বিএনপি এবার নির্বাচনে নেই। তাই, দলটির ভোট কার বাক্সে যাবে শহরজুড়ে সেই আলোচনা।
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) খুলনা সভাপতি কুদরত-ই-খুদা বলছেন, নৌকার প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেকের বিপরীতে যে চারজন মেয়র প্রার্থী আছেন তাদের বিএনপির ভোট টানার সম্ভাবনা খুব কম। খুলনায় মেয়র পদে এবার অসম এক লড়াই হচ্ছে। নৌকার প্রার্থীর বিপরীতে শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বি নেই। তাই মেয়র পদের ভোট নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ কম।
প্রায় পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার ভোটারের অর্ধেকই নারী। জয়-পরাজয় নির্ধারণে নারীদের ভোট নিঃসন্দেহে বড় ফ্যাক্টর। তবে, সবকিছুর পরও খুলনা সিটি ভোটের মূল আলোচনা, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যাওয়া নিয়েই।
এদিকে, বরিশালেও পৌছেছে নির্বাচনী সরঞ্জাম। রোববার সেসব সরঞ্জাম বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠানো হচ্ছে। আর ভোটের দিন যে কোনো বিশৃঙ্খলা মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মোতায়েন করা হয়েছে ১০ প্লাটুন বিজিবি। বরিশালের ১২৬ ভোটকেন্দ্রের ১০৬টিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
বরিশালে ভোটের পরিবেশ শতভাগ সুষ্ঠ আছে জানিয়ে, ভোটারদের নিশ্চিন্তে ভোট কেন্দ্র আসার আহবান জানিয়েছেন রিটানিং কর্মকতা।
কে হতে যাচ্ছেন বরিশালের নতুন নগর পিতা? সেই হিসেব এখনো পরিষ্কার নয়। তবে মেয়র ভোটের হিসেব না মিললেও ভোট উৎসবের আমেজ নগরজুড়ে। বড় চার মেয়র প্রার্থীর মধ্যে যেমন হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস; তেমনি কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যেও তুমুল লড়াইয়ের আভাস মিলছে বেশিরভাগ ওয়ার্ডে।
বরিশাল সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির পরিবেশ শতভাগ সুষ্ঠু আছে দাবি করে ভোটারদের র্নিভয়ে কেন্দ্রে যাবার অনুরোধ জানিয়েছেন।
এরি মধ্যে জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে ১২৬ টি ওয়ার্ডের ৮৯৪ টি বুথের জন্য পাঠানো হয়েছে ইভিএমসহ নির্বাচনী সরঞ্জাম। কোনো ইভিএমে সমস্যা দেখা দিলে তার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে আরো ৬০০ মেশিন। প্রিজাইডিং কর্মকর্তাদের দেয়া হয়েছে ভোট সুষ্ঠু করার নির্দেশনা।
একাত্তর/এসি