একাত্তর টেলিভিশনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রচারের পর কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে সড়কের সাড়ে তিন হাজারের বেশি গাছকাটার সরকারি সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে প্রশাসন।
এলাকার লোকজন জানান, ১০ বছর আগে কুমারখালীর লাহিনীপাড়া থেকে সান্দিয়ারা পর্যন্ত জিকে খাল ঘেঁষে প্রায় ২০ কিলোমিটার পাকা রাস্তার পাশে নানান জাতের গাছ রোপন করে বন বিভাগ। সামাজিক বনায়ন কর্মসূচির আওতায় সমবায় সমিতির মাধ্যমে রোপন করা এসব গাছের মালিক বন বিভাগ।
চুক্তি অনুযায়ী এসব গাছ কাটার পর অর্ধেকের বেশি টাকা পাওয়ার কথা সমবায় সমিতির সদস্যদের। সেই অনুযায়ী গত ৪ঠা এপ্রিল রাস্তার পাশের তিন হাজার গাছ কেটে ফেলার জন্য দরপত্র আহবান করে বন বিভাগ।
কিন্তু পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাকারী এসব গাছ না কাটার দাবি করছিল এলাকার লোকজন। তাদের দাবি নতুন গাছ রোপন না করে পুরোনো গাছ কাটা যাবে না।
স্থানীয় ভ্যানচালক আব্দুল হাকিম জানান, তিনি নিয়মিত ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। ক্লান্ত হয়ে পড়লে তিনি প্রায়ই সড়কে গাছের ছায়ায় বসে বিশ্রাম নেন। গাছগুলো কাটা হলে আর বসা হবেনা তার।
কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনিস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের ছাত্র মোস্তাক শাহরিয়ার বলেন, সড়কের ধারে গাছগুলো চোখের সৌন্দর্য। বড় পুকুরের ওখানে ছায়াতলে মানুষ বিশ্রাম নিতো। আরামে চলাচল করে পথচারীরা।
আলিমুজ্জামান রাজিব নামের আরেক ছাত্র বলেন, যেহেতু গাছগুলো আমাদের ছায়া দিচ্ছে। সড়কের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করছে। পরিবেশের ভারসাম্যও রক্ষা করছে। সেহেতু গাছগুলো না কাটাই ভালো। তার ভাষ্য, গাছপালা কমে যাওয়ার কারণেই বৃষ্টিপাত হচ্ছে না, তীব্র তাপদাহ চলছে। তিনি গাছ না কাটার দাবি জানান।
স্থানীয় একজন চাকরিজীবী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, গাছগুলো যেহেতু সড়ক নির্মাণ ও চলাচলে সমস্যা করছে না। সেহেতু শুধু টাকার জন্য কেন কাটা হবে? নির্বিচারে গাছ কাটার কারণেই প্রকৃতিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তিনি গাছ রক্ষার দাবি জানান।
জনগণের গাছ রক্ষার দাবির সাথে একমত পোষণ করেছেন চাপড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক মঞ্জু। তার মতে, সড়কের সৌন্দর্য বৃদ্ধি, ছায়া ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে গাছগুলো থাকা দরকার।
যেহেতু তাপদাহ চলছে, সেহেতু এই মুহূর্তে গাছগুলো থাকাই ভালো বলে মনে করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম।
গত বছরও একই প্রক্রিয়ায় বন বিভাগ প্রায় ১০ হাজার গাছ কেটে ফেলে।