বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে দুই দিন ব্যাপী শুঁটকি মেলা শুরু হয়েছে। মেলায় স্থানীয়সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা নানা ধরণের শুঁটকি মাছের পসরা নিয়ে বসেছেন। এবার মেলাতে নদী, হাওরের শুঁটকির পাশাপাশি সামুদ্রিক শুঁটকিও পাওয়া যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) থেকে উপজেলার কুলিকুন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এই মেলা শুরু হয়েছে।
জনশ্রুতি রয়েছে, মুঘল শাসন আমলে পণ্য বিনিময় প্রথার মাধ্যমে কুলিকুন্ডা গ্রামে এই মেলা শুরু হয়। যার ধারা অব্যাহত রয়েছে ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে। ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে প্রথম এক ঘণ্টা পণ্য বিনিময়ের মাধ্যমে মেলা শুরু হয়। এরপর টাকার বিনিময়ে বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ক্রেতারা তাদের পছন্দের শুঁটকি কেনেন।
সরেজমিন, মেলায় প্রতি কেজি নাইল্লা মাছের শুটকি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা, বোয়াল ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা, কাইক্কা ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাঁচকি শুটকি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, শোল ১৫০০ থেকে ১৮০০ টাকা এবং বাইম মাছের শুটকি প্রকার ভেদে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া এ বছর সামুদ্রিক কিছু মাছের শুটকিও এনেছেন দোকানিরা।
মেলায় শুঁটকি কিনতে আসা কয়েকজন জানান, বাজারের শুঁটকিতে কেমিক্যাল থাকে। কিন্তু শুঁটকি মেলায় হাওরাঞ্চলের দেশীয় নানা প্রজাতির মাছের শুটকি পাওয়া যায়। যার গুণগত মান ভালো।
বিক্রেতা জানান, শুটকির মান ভালো হওয়ায় বিক্রিও অনেক বেশি। দুই দিন ব্যাপী মেলায় ইজারার জন্য কোনো টাকা দিতে হয় না। সবাই পসরা সাজিয়ে বিক্রি করছেন।
তবে এ মেলায় শুধু শুটকিই নয়, গ্রামীণ-লোকজ নানা পণ্যের পসরাও সাজিয়েছেন দোকানিরা। শিশুদের জন্য রয়েছে মাটির তৈরি বিভিন্ন খেলনা। রয়েছে হরেক স্বাদের বাহারী খাবারও।
নাসিরনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. খাইরুল আলম বলেন, মেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে।