মাকে সন্তানের অভিভাবকত্ব কেনো দেয়া হবে না, এটি জানতে চাওয়ার পাশাপাশি সন্তানের অভিভাবকত্ব নির্ধারণে নীতিমালা তৈরির যে আদেশ হাইকোর্ট দিয়েছে, তাতে উচ্ছ্বসিত অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন।
তিনিই দেশের একমাত্র ও প্রথম মা, যিনি ছয় বছর আগে আদালতের নির্দেশে সন্তানের একক অভিভাবকত্ব পেয়েছিলেন। আদালতের এই আদেশকে একটি বড় অর্জন বললেন রিটকারী আইনজীবীও।
কয়েকবছর আগে কন্যার অভিভাবকত্ব পেলেও এই রায়ের মাহাত্ম্য পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেননি অভিনেত্রী। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গুরুত্বটা বুঝতে পেরেছেন তিনি।
বাঁধন বলেন, ‘বাচ্চাটাকে কাছে রাখতে চেয়েছি, যেহেতু ওর সব ভরণপোষণ আমিই করতাম। তাহলে আমি কেন তার অভিভাবক হতে পারব না। বাচ্চার বাবা কোনো দায়িত্ব পালন করেননি। আদালতে সেটি প্রমাণিত হয়েছে। তাই আমাকেই দেয়া হয়েছিল।’
সে সময় স্বামীর সাথে ছাড়াছাড়ির পর অভিনেত্রী জানতে পারেন, সন্তানের অভিভাবক তিনি নন। কেননা শত বছরেরও বেশি সময় আগের ১৮৯০ সালের অভিভাবকত্ব আইন বলছে, গর্ভধারিণী মা সন্তানের অভিভাবক নন।
শত বছরের সেই বাধা কাটাতে আদালতে গিয়েছিলেন বাঁধন। ২০১৮ সালের ৩০ এপ্রিল পারিবারিক আদালত অভিনেত্রী বাধনকে তার একমাত্র কন্যা মিশেল আমানি সায়রার অভিভাবক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। সেটি ছিলো দেশের প্রথম ও একমাত্র ঘটনা।
এবার ছয় বছর পর গেলো সোমবার হাইকোর্টে আবারো ওঠে বাঁধন প্রসঙ্গ। কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠনের করা রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট জানতে চায়, ১৮৯০ সালে করা আইনে কেনো নারীদের অভিভাবকত্বের স্বীকৃতি দেয়া হবে না? সেইসাথে নারীকে অভিভাবকত্ব দিতে একটি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশ দেন আদালত।
শুনানিতে বাঁধনের অভিভাবকত্ব পাওয়া নিয়েও আলোচনা হয়। যাকে একটি বড় অর্জন বলছেন রিটকারী আইনজীবী সারা হোসেন।
আদালতের সর্বশেষ আদেশে উচ্ছ্বসিত অভিনেত্রী বাঁধন বললেন, পরিবর্তন হচ্ছে। আরও হবে।
বাঁধনের মতে, যে ধারাটি তার মাধ্যমে শুরু হয়েছে তা চলমান থাকবে। এবং সামনে আইনে সংশোধনী আসবে।
এর আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে বাবার পাশাপাশি মায়ের অভিভাবকত্বের স্বীকৃতি দিয়েছিলো হাইকোর্ট।