কিছু দিন আগে ‘পিপ্পা’ সিনেমায় বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ গানের সুর নিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হন ভারতীয় সুরকার এ আর রহমান। এবার রহমানের সুর করা স্লামডগ মিলিয়নার সিনেমা নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করেছেন বলিউডের খ্যাতনামা পরিচালক রাম গোপাল বর্মা।
২০০৮ সালে মুক্তি পেয়েছিলো অস্কারজয়ী সিনেমা স্লামডগ মিলিয়নার। আর এই সিনেমার সুপারহিট গান ‘জয় হো’র সুরকার হিসাবে অস্কার এসেছিলো এ আর রহমানের ঝুলিতে।
শুধুই কি অস্কার, এই গানের জন্য একাধিক সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন সুরকার এ আর রহমান। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতে ছড়িয়ে পড়েছিলো তার খ্যাতি শুধু এই জয় হো-র অস্কারজয়ী সুরকার হিসাবে। দীর্ঘ ১৬ বছর পর হঠাৎ অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমানকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বলিউডের পরিচালক রাম গোপাল বর্মা।
ফিল্ম ক্যাম্পেনিয়নকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি দাবি করেছেন, জয় হো গানের সুরকার হিসাবে রহমান অস্কারের যোগ্যই নন। কারণ ওই গানের প্রকৃত সুরকার সুখবিন্দর সিং! এই মন্তব্য ঘিরে একেবারে হইচই পড়ে গেছে। শুধু তাই নয়, এ আর রহমান ও সুভাষ ঘাইয়ের মধ্যে সম্পর্কের তিক্ততা নিয়েও অনেক কথা বলেছেন রাম গোপাল বর্মা।
ভারতীয় গণমাধ্যম ‘এই সময়’ ওই সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন প্রকাশ করে শনিবার।
সুভাষ ঘাইয়ের ‘যুবরাজ’ ছবির জন্য যে সুর তৈরি করা হয়েছিলো সেটাই নাকি স্লামডগ মিলিয়নারে ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি রামগোপাল বর্মার। পরিচালকের থেকে টাকা নিয়ে সুখবিন্দর সিংকে দিয়ে সুর তৈরি করান এ আর রহমান। এই ঘটনায় রেগে গিয়ে সুভাষ ঘাই যুবরাজে ওই সুর ব্যবহার করেননি বলে জানান রাম বর্মা। পরে স্লামডগ মিলিয়নারে সেই সুর ব্যবহার করে অস্কার আসে এ আর রহমানের ঝুলিতে।
রাম গোপাল বর্মা জানান, যুবরাজ ছবির শ্যুটিংয়ের সময় থেকেই এ আর রহমান ও সুভাষ ঘাইয়ের মধ্যে অশান্তি হয়। যার জন্য রহমান সেই ছবির জন্য তার সুর করা গানটি অন্য একজন নির্মাতাকে দিয়ে দেন। পরে সেই গানের জন্য অস্কার পান এ আর রহমান।
রাম গোপাল ভর্মা ওই সাক্ষাৎকারে আরও জানান, ‘যুবরাজ ছবিতে সংগীত পরিচালক হিসেবে কাজ করছিলেন এ আর রহমান।
রাম গোপাল বর্মার দাবি, সুভাষ ঘাই এ আর রহমানকে একটি গানের সুর দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্ত, ব্যস্ততার কারণে সেই মুহূর্তে সুভাষ ঘাইয়ের কথা রাখতে পারেননি। পরে যখন গানের সুর দিয়েছিলেন তখন বেজায় চটে যান পরিচালক। বকাঝকাও করেন। তখন রহমান জানান, লন্ডন থেকে ফেরার পর সুখবিন্দর সিংয়ের স্টুডিয়োতে গিয়েছিলেন। লন্ডনে থাকার সময় রহমান সুখবিন্দর সিংকে ওই গানে সুর দেওয়ার কথা বলেছিলেন।
সুভাষ ঘাই সুখবিন্দরের স্টুডিয়োতে পৌঁছে দেখেন রহমানের জায়গায় তিনি গানের সুর তৈরি করছেন। তখন আবার সেখানে পৌঁছান রহমানও। তিনি জানতে চান সুরটা তৈরি হয়ে গিয়েছে কি না। সুভাষ ঘাইয়ের কাছে অনুমতি চান সুরটা শোনানোর জন্য। তখন পরিচালক আরও রেগে গিয়ে বলেছিলেন এই গানের সুরকার হিসাবে তাকে কোটি কোটি টাকা দিয়েছেন। আর তিনি সুখবিন্দরকে দিয়ে সুর করাচ্ছেন? সুভাষ ঘাইয়ের থেকে টাকা নিয়ে অন্য কাউকে দিয়ে সুর করানোর সাহস কী করে হয় সেই প্রশ্নও করেন।
চূড়ান্ত অশান্তির পর সুভাষ ঘাই যুবরাজ ছবির জন্য যে গান কম্পোজ করিয়েছিলেন সেটি আর ওই ছবিতে ব্যবহার করেননি। পরে ওই সুরটি স্লামডগ মিলিয়নার-এ ব্যবহার করেন। আর অস্কারজয়ী সুরকার হিসাবে বিশ্বজোড়া খ্যাতি অর্জন করেন। অন্যদিকে ২০০৮- এ সেলুলয়েডে মুক্তি পায় যুবরাজ। যা বক্স অফিসে ডাহা ফেল। তবে সিনেমার গান ছিল দারুণ হিট।