তেহরান তার পারমাণবিক খাতের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তি অন্যান্য দেশের সাথে, বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে ভাগ করে নিতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার (এইওআই) মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি।
রাজধানী তেহরানে অনুষ্ঠিত তৃতীয় ইরান-আরব সংলাপ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের সাথে এক বৈঠক বুধবার তিনি এই মন্তব্য করেন।
কামালভান্দি বলেন, পারমাণবিক ক্ষেত্রে ইরানের ৫০ বছরের ইতিহাস এবং অভিজ্ঞতা রয়েছে। ইরান অন্য দেশের বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে সক্ষম।
তিনি আরও বলেন, ইরান তার পারমাণবিক দক্ষতা এবং প্রযুক্তি সমস্ত দেশে, বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশগুলোতে হস্তান্তর ও ব্যাপক সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত। আমরা সব দেশের কাছে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ এবং রেডিও ফার্মাসিউটিক্যালস উৎপাদনের ক্ষেত্রে ইরানের অর্জনগুলো এদিন সম্মেলনে তুলে ধরেন এইওআই মুখপাত্র।
ইরানি বিজ্ঞানীদের হত্যা এবং দেশটির পারমাণবিক অগ্রগতিকে বাঁধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে ইসরাইলের শিল্প ও সাইবার-নাশকতার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমরা আমাদের দেশে পারমাণবিক শিল্প সহজে পাইনি এবং এর জন্য আমরা একটি ভারী মূল্য পরিশোধ করেছি।
এদিকে কমলাভান্দি দুঃখ প্রকাশ করে জানান, তেহরান এবং আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মধ্যে আলোচনার সময় রাজনৈতিক সমস্যাগুলো প্রাধান্য পেয়েছে, অথচ আলোচনাটি প্রযুক্তিগত এবং সুরক্ষা চুক্তির কাঠামোর মধ্যে হওয়া উচিত ছিলো।
তিনি বলেন, বর্তমানে ইরানের একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে এবং আগামী ২০ বছরের মধ্যে ২০ হাজার মেগাওয়াট (মেগাওয়াট) পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আরও দুটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
গেলো কয়েক দশক ধরে ইরান শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে গেলেও পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দিয়েছে।
ইরান ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করে বিশ্বকে তার পারমাণবিক কর্মসূচির শান্তিপূর্ণ প্রকৃতি দেখিয়েছে, যা আনুষ্ঠানিকভাবে জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত। কিন্তু, ২০১৮ সালের মে মাসে ওয়াশিংটনের একতরফাবভাবে তা প্রত্যাহার করে এবং পরবর্তীতে তেহরানের বিরুদ্ধে পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
সবশেষ গেলো মাসে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা ও সুরক্ষা বিভাগের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমাদ হাক তালাব বলেছিলেন, দখলদার ইসরাইল যদি ইরানের পরমাণু কেন্দ্র ও স্থাপনাগুলোতে হামলা চালায় তাহলে তেহরান চুপ করে বসে থাকবে না, বরং পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির কাজে হাত দেবে।
তেল আবিবকে সতর্ক করে তিনি আরও বলেন, ইসরাইলের পরমাণু কেন্দ্রগুলোকে আমরা চিহ্নিত করে রেখেছি এবং চরম আঘাত হানার জন্য প্রয়োজনীয় সব রকম তথ্য-উপাত্ত আমাদের হাতে রয়েছে।