ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় বেশ কয়েকজন হুথি কমান্ডার নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজ এ দাবি জানিয়েছেন।
সাক্ষাৎকারে ওয়াল্টজ বলেন, এটি কোনো দায়সারা হামলা ছিলো না। এটা ছিলো অপ্রতিরোধ্য এবং ব্যাপক আকারের একটি হামলা। তাই এতে বেশ কয়েকজন হুথি কমান্ডার নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ওয়াল্টজ বলেন, এবারের হামলা অনেক বেশি সুনির্দিষ্ট, কারণ হুথিদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইরানের দিকেও তাদের মনোযোগ রয়েছে। এদিকে, এর কয়েকদিন আগেই ট্রাম্প হুথিদের সতর্কবার্তা দিয়ে বলেন, যদি তারা লোহিত সাগরে চলাচলকারী জাহাজগুলোতে হামলা বন্ধ না করে, তাহলে তাদের ওপর ‘নরক নেমে আসবে’।
২০২৩ সালে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী গাজা উপত্যকায় অভিযান শুরুর পর থেকে গাজার জনগণ এবং উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে লোহিত সাগরে চলাচলকারী বাণিজ্যিক জাহাজগুলোতে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা শুরু করে ইয়েমেনের সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হুথি।
সম্প্রতি মার্কিন একটি বাণিজ্য জাহাজে হামলার পর শনিবার ইয়েমেনে হুথিদের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী। এতে নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫৩ জন এবং আহত হয়েছেন আরও ৯৮ জন। ওয়াল্টজের দাবি, নিহতদের মধ্যে কয়েকজন কমান্ডারও রয়েছেন।
হুথিদের লক্ষ্য করে হামলা অবশ্য এই প্রথম নয়। এর আগেও হুথিদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সে সময় ক্ষমতায় ছিলেন ট্রাম্পের পূর্বসূরী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে এবারের হামলা আগেকার হামলাগুলোর থেকে ভিন্ন দাবি করে এবিসি নিউজকে ওয়াল্টজ বলেন, এবারের হামলা অনেক বেশি সুনির্দিষ্ট, কারণ হুথিদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইরানের দিকেও আমাদের মনোযোগ রয়েছে।
শনিবারের হামলার পর হুথিদের শীর্ষ নেতা আব্দুল মালিক আল-হুতি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যতদিন ইয়েমেনে আক্রমণ চালাবে ততদিন তারাও লোহিত সাগরে মার্কিন জাহাজগুলোকে লক্ষ্যস্থল করবে। টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, তারা যদি তাদের আগ্রাসন অব্যাহত রাখে, আমরাও তৎপরতা বৃদ্ধি করবো।
এর প্রতিক্রিয়া মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ রোববার ফক্স নিউজের ‘সানডে মর্নিং ফিউচারস’ টকশোতে বলেন, ইয়েমেনের হুতিরা লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা চালানো বন্ধ না করা পর্যন্ত, যুক্তরাষ্ট্র তাদের ওপর আক্রমণ চালিয়ে যাবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই হামলার পরিসর আরও বাড়বে।