ইরান-ইসরাইল উত্তেজনা বাড়ায় বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি রপ্তানি পথ হরমুজ প্রণালি বন্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইরান প্রণালিটি বন্ধ করলে বিশ্বজুড়ে তেলের দাম আকাশছোঁয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে শুধু জ্বালানির বাজারে অস্থিরতা নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যেই সংঘাত ছড়িয়ে পড়তে পারে। তবে এ জলপথটি কী ও কেনই বা তা বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ?
ওমান ও ইরানের মাঝখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ জলপথ হরমুজ প্রণালি। যা পারস্য উপসাগরকে ওমান উপসাগর ও আরব সাগরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। এই প্রণালীর একদিকে আরব দেশগুলোর অবস্থান। যার মধ্যে আছে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলো। আর অন্য পাশে ইরান।
যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য কর্তৃপক্ষ ইআইএ এই জলপথকে বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেল পরিবহন চোকপয়েন্ট হিসেবে বর্ণনা করেছে। এর সবচেয়ে সংকীর্ণ অংশ মাত্র ৩৩ কিলোমিটার বা ২১ মাইল চওড়া, যেখানে শিপিং লেন মাত্র দুই মাইল করে। তাই এটি অত্যন্ত ব্যস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ।
জ্বালানি ও পরিবহণ বাজার পরামর্শক সংস্থা ভরটেক্সার তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রায় ২ কোটি ব্যারেল অপরিশোধিত তেল, কনডেনসেট এবং জ্বালানি এই জলপথ দিয়ে পরিবাহিত হয়। বিশ্বের অন্যতম বড় তরল প্রাকৃতিক গ্যাস এলএনজি রপ্তানিকারক দেশ কাতারও এই প্রণালীর ওপর নির্ভরশীল।
ইআইএর তথ্য অনুযায়ী, হরমুজ প্রণালি দিয়ে যাওয়া জ্বালানি ও তেলের প্রায় শতকরা ৮২ ভাগের গন্তব্য এশিয়ার বিভিন্ন দেশে৷চীন, ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া এই চারটি দেশ সম্মিলিতভাবে এই প্রণালি দিয়ে যাওয়া তেল ও কনডেনসেটের প্রায় ৭০ ভাগ আমদানি করে ৷ পথটি বন্ধ হলে এ দেশগুলো সবচেয়ে ক্ষতিতে পড়বে।
এদিকে সংঘাতের ফলে ইরান যদি প্রণালীটি বন্ধ করে দেয়, তাহলে সামরিক হস্তক্ষেপ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এই অঞ্চলে বাণিজ্যিক জাহাজ রক্ষার দায়িত্বে আছে মার্কিন পঞ্চম নৌবহর। ইরানের এমন পদক্ষেপ সৌদি আরব ও আরব আমিরাতের মতো উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর সঙ্গে তার সম্পর্ককে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। তাছাড়া, ইরান নিজেও এই প্রণালি ব্যবহার করে তেল রপ্তানি করে৷