পাকিস্তানে যতই নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসছে ততই, দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলায় সাজা ঘোষণা করা হচ্ছে। এবার তেহরিক-ই-ইনসান দলের প্রধান ইমরান খানের বিরুদ্ধে ঘোষণা করা হয়েছে ‘অনৈসলামিক নিকাহ’ মামলায় রায়।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডন ও দি নিউজ জানিয়েছে, ঘোষিত রায়ে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। শনিবার সিনিয়র সিভিল জর্জ কুদরাতুল্লাহ আদিয়ালা কারাকার চত্বরে এই রায় ঘোষণা করেন।
এই নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে আরো দুটি মামলায় ইমরান খানকে মোট ২৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ তিন মামলায় ইমরান খানের মোট ৩৩ বছরের জেল সাজা হলো। নিকাহ মামলায় ইমরান ও বুশরা উভয়কে পাঁচ লাখ রুপি করে জরিমানাও করা হয়।
রায় ঘোষণার সময় ইমরান ও বুশরা উভয়ে আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বুশরা বিবিকে রায় ঘোষণার আগে দম্পতির বনিগালা বাসভবন থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে সাইফার মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়।
ওই সময় তাদের বাসভবনকে সাব-জেল ঘোষণা করে বুশরা বিবিকে সেখানে রাখা হয়। বুশরা বিবির সাবেক স্বামী খাওয়ার মনেকার আবেদনের প্রেক্ষাপটে এই মামলাটি হয়। তিনি ইমরান খানের সাথে বুশরার বিয়েকে ‘অনৈসলামিক ও অবৈধ’ হিসেবে অভিহিত করেন।
মনেকা অভিযোগ করেন, বুশরা তাদের বিচ্ছেদের পর ইদ্দতের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ইমরান খানকে বিয়ে করেছিলেন। যা ইসলামি অনুশাসনে অবৈধ। তিনি আরো অভিযোগ করেন, ইমরান খান তার পুরো জীবনকে ধ্বংস করেছেন। এই বিয়ের কারণেই তার সাজানো সংসার তাসের মতো ভেসে গেছে।
ইসলামি আইনে বলা হয়েছে, তালাকের মাধ্যমে বিয়ে বিচ্ছেদ হলে ঋতুবতী স্ত্রীর জন্য তিন মাসিক ও ঋতুহীন স্ত্রীর জন্য তিন মাস ইদ্দত পালন করা ওয়াজিব। ইদ্দতের মধ্যে নারীদের সুস্পষ্ট ভাষায় বিয়ের প্রস্তাব দেয়াও নাজায়েজ। তাই কাবিননামা তৈরি করে ফেলা অন্যায় ও গুনাহের কাজ।
আদালতের রায়ের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং পিটিআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান সাংবাদিকদের বলেন, তাকে ও তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে ‘অপদস্থ এবং অপমান’ করার জন্য এই মামলাটি সাজানো হয়েছে। তিনি বলেন, এই মামলাটির মাধ্যমে ইদ্দতের সাথে সম্পর্কিত মামলার ইতিহাস সৃষ্টি শুরু হলো। আর তোশাখানা মামলায় এই প্রথম কাউকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হলো।