ফিলিস্তিনসহ সারা বিশ্বে চলমান যুদ্ধ বন্ধ করে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহবান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ইমামদের কাছে দোয়া চেয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
ইমামদের প্রতি আহবান রেখে তিনি বলেছেন, তৃণমূলে শান্তি বজায় রেখে সবাই যেন নিজ নিজ ধর্ম পালন করতে পারেন সেই সঙ্গে শান্তির ধর্ম ইসলাম যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে জাতীয় ইমাম সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জের পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে জাতীয় ইমাম সম্মেলনের আয়োজন করে ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও ধর্ম মন্ত্রণালয়। এতে উপস্থিত ছিলেন প্রায় এক লাখ ইমাম।
প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূল মঞ্চে প্রবেশের আগে আরও দুই অডিটরিয়ামে উপস্থিত ইমামের শুভেচ্ছা জানিয়ে দেশের উন্নয়ন যাত্রা অব্যাহত রাখতে দোয়া চান।
বক্তব্যের শুরুতেই বিশেষ অতিথির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন সরকারপ্রধান। একই সঙ্গে দেশে ইসলাম প্রচার ও প্রসারে জাতির পিতার অবদান তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করে দেশে বিভিন্ন পর্যায়ে ২৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সেন্টার ইতিমধ্যে নির্মাণ করেছি।
শান্তির ধর্ম ইসলামকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা সম্পর্কে সতর্ক থাকতে ও জঙ্গিবাদ দমনে ইমামদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে আহবান জানান সরকারপ্রধান।
ইসলাম শান্তির ধর্ম তাই অন্য ধর্মের মানুষের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সবার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করার পরিবেশ বজায় রাখতে ও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে ইমামদের সহযোগিতা প্রয়োজন।
শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ইসলাম প্রচারের জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন স্থাপন করেন। টেলিভিশন রেডিওতে কোরআন তেলাওয়াত শুরু করেন জাতির পিতা। সেই পদাঙ্ক অনুসরণ করে ইসলাম চর্চা ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য সারাদেশে ৫৪৬ টি মডেল মসজিদ নির্মাণের করি।
সব মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিনসহ সবাইকে অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। বিদায় হজের সেই বাণী আমরা অনুসরণ করবো। জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস মাদক এসবের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পরিহার করবো। মুষ্টিমেয় লোকের জন্য আমাদের শান্তির ধর্ম বিশ্বব্যাপী যেন প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেদিকে সবার সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার যাকাত তহবিল ব্যবস্থাপনা আইন-২০২৩ প্রণয়ন করেছে। এই বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ বসবাস করে। সবাই যেন নিজ নিজ ধর্ম যথাযথভাবে পালন করতে পারে।
নিরীহ মানুষকে যেন হত্যা না করা হয়, তৃণমূলের যেন শান্তি বজায় থাকে এ আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়ন করাই আমার একমাত্র লক্ষ্য। আপনাদের দোয়া চাই। সারা বিশ্বব্যাপী যে যুদ্ধ চলছে প্যালেস্টাইন এদের ওপর যে আক্রমণ ছোট্ট শিশুদের যেভাবে হত্যা করা হচ্ছে আমরা আর তা চাই না। প্যালেস্টাইনে বাংলাদেশ সহায়তা পাঠিয়েছে। পৃথিবীর সব রাষ্ট্র প্রধানদের আমি যুদ্ধ বন্ধের অনুরোধ করেছি, আমরা যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সৌদির মসজিদ-ই-নববীর ইমাম শায়খ ড. আব্দুল্লাহ বিন আব্দুর রহমান আল বুয়াইজান কোরআনের প্রকৃত অর্থ জেনে সেই আদর্শ ধারণ করে ইমামদের দেশ ও মানুষের জন্য নিবেদিত হতে আহবান জানান।
পরে জাতীয় পর্যায়ে প্রায় দেড় হাজার শ্রেষ্ঠ ইমাম ও বিশ্বজয়ী হাফেজ, খামারিসহ কয়েক জনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানের শেষে ষষ্ঠ পর্যায়ে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন ঘোষণা করেন সরকারপ্রধান।
একাত্তর/এসি