কোটা আন্দোলনকারীদের এক দফা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় সারাদেশে পাঁচ জেলায় ১০ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এরমধ্যে মুন্সীগঞ্জে দুইজন, রংপুরে দুইজন, বগুড়ায় দুইজন, পাবনায় তিনজন এবং মাগুরায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এছাড়া হামলা-সংঘর্ষে আহত হয়েছেন শতাধিক। এর মধ্যে একাত্তর টিভির তিন সাংবাদিকসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিক রয়েছেন।
রোববার সকালে মুন্সীগঞ্জ শহরের সুপার মার্কেট ও কৃষি ব্যাংক মোড় এলাকায় জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও সড়কে অবস্থান নেন।
একপর্যায়ে দুই পক্ষ সুপার মার্কেট এলাকায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। আর গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।
সংঘর্ষে বগুড়া সদর ও দুপচাচিয়া উপজেলায় একজন করে নিহত হয়েছে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বগুড়ার সদরের বড়গোলা এলাকায় বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় পুলিশের সাথে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়।
দুপচাচিয়া উপজেলায় মনিরুল ইসলাম নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। দুপুর ১২টার দিকে মারা যান।
সকালে রংপুর টাউন হলে অবস্থান নেন কোটা আন্দোলনকারীরা। আর আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা অবস্থান নেন পায়রা চত্বর ও জাহাজ কোম্পানি মোড়ে। এসময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা টাউন হলের দিকে যেতে চাইলে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়।
মাগুরা শহরে ঢাকা রোড ও ভায়নার মোড়ে কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে সকাল থেকে থেমে থেমে পুলিশ ও আওয়ামী লিগের নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে।
এ সময় পারনান্দুয়ালী ব্যাপারীপাড়া জামে মসজিদের সামনে চলা সংঘর্ষে ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান রাব্বি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এছাড়া শহরের ভায়নার মোড়ে মাইক্রোবাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় পুড়িয়ে দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শত শত আন্দোলনকারী বেলা ১১ টার দিকে আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
এক পর্যায়ে তারা কার্যালয়ের সামনে থাকা মোটরসাইকেল গুলোতে আগুন দেয়। পরে বিভিন্ন কক্ষে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এলাকা থেকে আন্দোলনকারীরা জড়ো হয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সামনে আসে।
সকাল দশটায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার পাশে মানোরা এলাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়। এ সময় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরাও বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে যুক্ত হয়। মুহূর্তেই শত শত আন্দোলনকারীরা ঢাকা আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকে।
এ সময় সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয় তারা। হামলায় ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি মনজুর রহমান এবং এটিএন বাংলার জেলা প্রতিনিধি শহিদুল ইসলাম সুজনসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।