দেশের মানুষের অন্যতম প্রধান উৎসব আর চার দশক ধরে পহেলা বৈশাখের অবিচ্ছেদ্য অংশই বলা যায় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে। অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে সঙ্গী করে সব বর্ণ আর ধর্মের মানুষকে নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে শুরু হয় এই শোভাযাত্রা। শুরুটা হয়েছিল ১৯৮৬ সালে, নাম ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা। ১৯৯০ সাল থেকে পরিচিতি পায় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ নামে। সেই নামে আবার পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানিয়েছে সরকার।
সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী জানিয়েছেন, নববর্ষ উদযাপনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম বদল হতে পারে। তিনি জানান, নতুন নাম ‘নববর্ষ শোভাযাত্রা’ হতে পারে। তবে সোমবার এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রোববার (২৩ মার্চ) সচিবালয়ে জাতীয়ভাবে বাংলা নববর্ষ এবং চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, গারো ও অন্য জাতি-গোষ্ঠীর নববর্ষ উদযাপন নিয়ে সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা জানান।
বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আবেদনের পর জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কো ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে।
নাম পরিবর্তন হলেও ইউনেস্কোর এই স্বীকৃতিতে কোনো সমস্যা হবে না জানিয়ে ফারুকি বলেন, আগে শুধুমাত্র বাঙালীদের উৎসব থাকলেও এ বছর সব জাতি-গোষ্ঠীকে সঙ্গে নিয়ে স্মরণে রাখার মতো উদযাপন করা হবে। অভ্যুত্থান পরবর্তী নববর্ষ উদযাপনে ভিন্নমাত্রা থাকবে, ইসলামি মূল্যবোধসহ বেশ কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত হবে বলে।
ফারুকী বলেন, আগের যে কোনো বছরের তুলনায় এবার আলাদা ও ভিন্নমাত্রার আয়োজন হবে, যা ১৪ এপ্রিল সবার চোখে পড়বে বলেও জানান তিনি।
অভ্যুত্থান পরবর্তী প্রথমবারের মতো নববর্ষ উদযাপনে বেশ কিছু পরিবর্তন থাকছে। নিশ্চিত করলেন, বৈঠকে অংশ নেওয়া অনেকেই।
আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান জানান, বৈচিত্র্যের মধ্যেই ঐক্য ধরে রাখতে হবে।
এ বছর সন্ধ্যার মধ্যেই অনুষ্ঠান শেষ করার কোনো বাধ্যবাধকতা থাকছেনা, নববর্ষের রাতে সংসদ ভবন এলাকায় হবে ড্রোন শো। আর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলেও জানান সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা।