মিয়ানামারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর তিন দফায় প্রায় ১৫২ মেট্রিক টন খাদ্য ও চিকিৎসা উপকরণ বিতরণ করেছে বাংলাদেশ। পাশাপাশি উদ্ধার অভিযানেও অংশ নেন বাংলাদেশি ফায়ার, বিমান, সেনা ও নৌবাহিনীর সদস্যরা। ১৫ এপ্রিল, মিয়ানমারে ত্রাণ সহায়তা শেষে দেশে ফেরে সহায়তাকারী দলের সদস্য ও চিকিৎসকরা।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) ক্যান্টনমেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ জানায়, প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে মিয়ানমারের মানবিক বিপর্যয়ে পাশে দাঁড়ায় বাংলাদেশ।
গেল ২৮ মার্চের ভূমিকম্পে ধারণার চাইতেও বেশী ক্ষয়ক্ষতির কবলে পড়ে দেশটি। মৃতের সংখ্যাও ছিল কয়েক হাজার। বিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে ব্যাহত হয়েছিল উদ্ধার তৎপরতা। ত্রাণ ও চিকিৎসার জন্য চলছে হাহাকার। সব মিলে চরম মানবিক বিপর্যয়ের কবলে পড়েছিল দেশটি।
এ সময় সহায়তা নিয়ে মিয়ানমারের পাশে দাড়ায় বাংলাদেশ। ৩০ মার্চ থেকেই পাঠানো শুরু হয় ত্রাণ সহায়তা। তিন ধাপে বিমান ও জাহাজের মাধ্যমে পাঠানো হয় খাবার ও ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী। পাশাপাশি উদ্ধারকারী দল এবং চিকিৎসকরাও অংশ নেন এই বিপর্যয়ে।
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মায়ানমারে তৃতীয় ধাপে ত্রাণ ও মানবিক সহায়তা শেষে মঙ্গলবার দেশে ফিরেছে নৌবাহিনী জাহাজ ‘বানৌজা সমুদ্র অভিযান’। এর আগে বাংলাদেশ থেকে মায়ানমারে যাওয়া ৫৫ সদস্যের উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তাকারী দল এবং বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমারে আটকে পড়া ২০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে নিয়ে জাহাজটি বাংলাদেশে ফিরে এসেছে।
পরের দিন বুধবার সকালে ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে, মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বে পাঠানো উদ্ধার ও চিকিৎসা সহায়তা দলের সদস্যরা দেশে ফেরা উপলক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে সেনাবাহিনী। উদ্ধারকারী দলের পক্ষ থেকে তাদের কাজের অভিজ্ঞতা এবং প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরা হয়।
সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান জানান, উদ্ধারকারী দল মিয়ানমারে বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে বিশ্ব দরবারে সুনাম অর্জন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেসময় চিকিৎসক দল ৮৮৫ জনকে চিকিৎসা সেবা দেন। যা সারাবিশ্বে যথেষ্ট সারা ফেলেছে।
মিয়ানমারে মানবিক কার্যক্রম ও উদ্ধারকাজে অংশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা সদস্যদের সম্মাননা দেয়া হয়। এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবরাও উপস্থিত ছিলেন।