আজ বিভীষিকাময় সেই রাত। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র বাঙালির উপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী। 'অপারেশন সার্চলাইট' নামে পরিচালিত সে হত্যাযজ্ঞে শুধু ঢাকা নয়, সবকটি বৃহৎ শহরে হামলা চালিয়ে স্বাধীনতাকামী জনতাকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়। এই নির্মম রাতকে কালরাত্রি হিসেবে স্মরণ করা হয়।
২০১৭ সাল থেকে ২৫ মার্চকে জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে। দিনটি স্মরণে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এক বাণীতে বলেন, 'একাত্তরের বীভৎস গণহত্যা শুধু বাংলাদেশের নয়, বিশ্বমানবতার ইতিহাসেও একটি কালো অধ্যায়। এমন গণহত্যা আর কোথাও যাতে না ঘটে, গণহত্যা দিবস পালনের মাধ্যমে সে দাবিই বিশ্বব্যাপী প্রতিফলিত হবে।'
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক এক বাণীতে বলেন, 'গণহত্যা দিবসের ৫০ বছর পূর্তিতে আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি- প্রয়োজনে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে হলেও ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ নির্যাতিত মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখব।'
গণহত্যা দিবসের কর্মসূচী হিসেবে আজ রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশে প্রতীকী ‘ব্ল্যাকআউট’ পালন করা হবে। তবে কেপিআই এবং জরুরি স্থাপনাগুলো এ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে। একইসাথে এ রাতে সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত এবং বেসরকারি কোনো স্থাপনায় কোনো আলোকসজ্জা করা যাবে না বলেও নির্দেশনা দিয়েছে সরকার।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ‘মুজিব চিরন্তন’ শীর্ষক জাতীয় আয়োজনের নবম দিনে আজ ২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবস স্মরণে অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে ‘গণহত্যার কালরাত্রি ও আলোকের অভিযাত্রা’।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী বাঙ্গালিদের উপর মানব ইতিহাসের যে নিকৃষ্টতম হত্যাযজ্ঞ শুরু করে তা অব্যাহত থাকে পরবর্তী নয় মাস। দীর্ঘ এ আসময়ে ৩০ লক্ষ নিরীহ মানুষকে তারা হত্যা করে, ২ লক্ষ নারীকে করে নির্যাতন।
স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের মানুষের দাবী, ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হোক। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকার যে কর্মকান্ড শুরু হয়েছে তা আরও গতিপ্রাপ্ত হোক এবং সফলতার মুখ দেখুক, এমনটাই প্রত্যাশা করে তরুণ প্রজন্ম।