নানা আয়োজনে উদযাপিত হয়েছে সাবেক প্রধান বিচারপতি প্রয়াত সৈয়দ মাহবুব মোরশেদের ১১৩তম জন্মবার্ষিকী।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ স্মৃতি সংসদ। এসময় ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও কোরআনখানির আয়োজন করা হয়।
এছাড়াও আইনজীবীদের বিভিন্ন সংগঠন ও সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান তার গৌরবোজ্জ্বল জীবনের ওপর আলোচনা সভার আয়োজন করে।
সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ ১৯১১ সালের ১১ই জানুয়ারি তৎকালীন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক ছিলেন তার মামা।
বগুড়া জেলা স্কুল থেকে ১৯২৬ সালের ম্যাট্রিক পরীক্ষায় তিনি রাজশাহী বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন। কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতি বিষয়ে তিনি অনার্সসহ বিএ পাস করেন ১৯৩০ সালে। সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ এমএ পাস করেন ১৯৩২ সালে এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম শ্রেণীতে আইন পাস করেন ১৯৩৩ সালে। ১৯৩৯ সালে তিনি ইংল্যান্ডের লিনকন্স ইন থেকে ব্যারিস্টারী ডিগ্রি লাভ করেন।
ভারতে ফিরে ১৯৩৯ সালে তিনি কলকাতা হাইকোর্টে আইন পেশায় যুক্ত হন। ১৯৫৫ সালে যোগ দেন ঢাকা হাইকোর্টে। ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন।
সৈয়দ মাহবুব মোরশেদ ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে অংশ নেন। উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য তিনি উদ্যোগী ভূমিকা নিয়েছিলেন। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে ও ২১ দফা কর্মসূচি প্রণয়নে তার ভূমিকা ছিলো উল্লেখযোগ্য। প্রধান বিচারপতি থাকাকালে নিম্ন আদালতের উন্নয়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
পাকিস্তানের বিপক্ষে গিয়ে ১৯৬৭ সালে তিনি প্রধান বিচারপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন এবং দেশের মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়ে আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছিলেন। ১৯৬৯ সালের গণ-অভ্যুত্থানেও তিনি রাজনীতিবিদদের সহায়তায় এগিয়ে আসেন।
পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্যজনিত কারণে তিনি নিজেকে খানিকটা গুটিয়ে নিয়েছিলেন। ১৯৭৯ সালের ৩ এপ্রিল মারা যান এ বিচারপতি।