দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি।
সরকারের পদত্যাগ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দেলনরত বিএনপি বলছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য হাস্যকর।
বুধবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থেকে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য হাস্যকর। দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের দাবি উপেক্ষা করে তফসিল ঘোষণা তামাশা মাত্র। বিএনপি এই তফসিল প্রত্যাখ্যান করছে।
বুধবার সন্ধ্যায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তফসিল অনুযায়ী ভোট হবে ৭ জানুয়ারি।
রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়ন পত্র জমার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর। এ দিন থেকেই প্রার্থীরা প্রচার শুরু করতে পারবেন। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ হবে ৫ জানুয়ারি সকালে।
মনোনয়নপত্র জমার জন্য ১৪ দিন সময় দেওয়া হয়েছে এবং প্রচারের জন্য ১৯ দিন সময় রয়েছে। নিয়মানুযায়ী ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রচার শেষ করতে হয়। সেই হিসেবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটের প্রচার চালানোর সুযোগ থাকবে। এবার ৩০০ আসনেই ভোট হবে ব্যালট পেপারে।
সংবাদ সম্মেলনে সরকারকে হুঁশিয়ার করে রিজভী বলেন, এই সিদ্ধান্তের পর দেশে যে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তার দায় সরকারের। ক্ষমতাসীনরা নিজেরাই দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। জনগনের আন্দোলন দ্রুত আরও ত্বরান্বিত হবে, সরকারের পদত্যাগ হবে। তফসিল ঘোষণা দিয়ে নির্বাচনের স্বপ্ন পূরণ হবে না।
সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো সহিংস আন্দোলন চালাচ্ছে। আর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার অবস্থানে অনড়।
একই দাবিতে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিলো বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে সেই নির্বাচনে জিতে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি গণফোরামের ড. কামাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে ভোটে অংশ নেয়। ভোটে ভরাডুবি ঘটে বিএনপির। এরপর কারচুপির অভিযোগ তোলে তারা। সংসদের মেয়াদের শেষ দিকে এসে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করেন।
এবার ২০১৪ সালের মত একই দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। ফিরে এসেছে সংঘাতের পরিবেশ। যানবাহনে অগ্নিংযোগ আর নাশকতার ঘটনায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে।
যুক্তরাষ্ট্র দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে নিঃশর্ত সংলাপের আহ্বান জানিয়েছে। বিএনপি দেশটির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও সংশয়ে রয়েছে তারা। আর আওয়ামী লীগ বলেছে, সংলাপের সময় শেষ।