নির্বাচন বিএনপির কোনো অন্যায় দাবি নয় উল্লেখ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো ধোঁয়াশা সৃষ্টির অবকাশ নেই। আর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে নিজেদের ভেবে কিছু উপদেষ্টা বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে বিতর্কিত করছেন বলে অভিযোগ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।
শনিবার (২৪ মে) সকালে প্রেসক্লাবে আলাদা অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন।
বিএনপি নেতা মঈন খান বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি করে বিএনপি কোনো অন্যায় করেনি। বরং যারা নির্বাচন চায় না, বাংলাদেশের পরিবর্তন চায় না তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্র বিরোধী। তাই জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো ধোঁয়াশা সৃষ্টির অবকাশ নেই।
বৈচিত্র ভুলে গিয়ে ঐক্য করতে গেলেই স্বৈরাচারের জন্ম হয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, মাত্র ৯ মাসের ব্যবধানে কীভাবে দেশ এই পরিস্থিতিতে এসে পৌঁছেছে তা ভেবে দেখা দরকার। ঐতিহাসিক সত্য অস্বীকার করা যায় না। ৭১ এ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। যারা অস্বীকার করতে চায়, তারা যতো বড় নেতা বা যেই হোক না কেন ইতিহাসের আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বৈরাচারের কবলে ছিল ১৫ বছর, মানুষের সামনে একটি মাত্র সমাধান তা হলো নির্বাচন। গণতন্ত্র সঠিকভাবে মানতে হলে প্রতি পাঁচ বছর পর পর পরীক্ষা দিতে হয়। পরীক্ষায় নকলবাজি চললে সেই পরীক্ষায় লাভ নেই। ৭২ এর সংবিধান এখন আর নাই, বাতিল চেয়ে কী লাভ, এটা অন্তত ১৫ বার সংস্কার হয়েছে। যারা ছুঁড়ে ফেলতে চায় তারা হয়তো না বুঝেই বলে।
মঈন খান বলেন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও নির্বাচন এগুলো মাথায় রেখে সব সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সবাই সবকিছুতে একমত না হওয়ারই কথা। আজকে যখন পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে তখনও আইন মন্ত্রণালয় থেকে রায় লিখে দেওয়া হচ্ছে। আর বিচার বিভাগের স্বাধীনতা না থাকলে গণতন্ত্র আছে বলা যায় না। বাংলাদেশের মানুষ জাতিগত ভাবে গণতান্ত্রিক, এরা কথা বলতে চায়। কথা বলার অধিকারই গণতন্ত্র।
এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে নিজেদের সম্পত্তি মনে করে কিছু কিছু উপদেষ্টা বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধানকে বিতর্কিত করছেন।
তিনি বলেন, জনগণ ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়। পাঁচ আগস্টের বিপ্লবে সেনাবাহিনীরও সহযোগিতা ছিলো। অতএব কোনো সংস্থাকে দলীয় ট্যাগ লাগানোর চেষ্টা করবেন না। বিএনপি কারও অবদানকে অবমাননা করে না। ড. ইউনুস শুধু দেশের নয়, পুরো পৃথিবীর সম্পদ। রাজনৈতিক দল ও সম্মিলিতভাবে ওনাকে বসানো হয়েছে।
শেখ হাসিনার বিচার নিয়ে কোনো আপস নয় জানিয়ে তিনি বলেন, বিচার হতেই হবে। বিএনপি আইনের শাসনে বিশ্বাস করে। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছে বিএনপি, এমন নতুন বয়ান তৈরির চেষ্টা করবেন না, জনগণ রুখে দেবে।
সংস্কার জিয়াউর রহমানের আলম থেকেই শুরু উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি চলমান প্রক্রিয়া। ড. ইউনুস ঠিক থাকলেও তার পরিষদের কেউ কেউ বলে, আমরা কী শুধু নির্বাচন দিতে এসেছি, এ বাদ দেন।
তিনি বলেন, আমার একটা মবের মুল্লুকের মধ্যে পরেছি। কিছু উপদেষ্টা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করছেন। ড. ইউনুসকে বিতর্কিত করছে তার উপদেষ্টা পরিষদ। এমনকি তারা সব কৃতিত্ব নিজেদের দাবি করে অন্যদের হেয়ালি মনে করছেন। তারা একেক সময় একেকভাবে কথা বলাসহ বাড়তি কথা বলছেন।
সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব মন্তব্য করে ডা. জাহিদ বলেন, তারা জনগণের বন্ধু, তা বার বার প্রমাণ করেছে। অতএব তাদেরও বিতর্কিত করবেন না।
তিনি হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ক্ষমতায় বসে যখন তখন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে সবাইকে বিতর্কিত করবেন না। এখনও সময় আছে রাজনৈতিক দলগুলোকে বিতর্কিত করবে না।
অপর এক আলোচনায় রাজনীতিবিদদের বাদ দিয়ে দেশে বিরাজনীতিকরনের কিচেন কেবিনেট ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।