গোল করে ছুটে গিয়ে আনচেলোত্তির সঙ্গে সেলিব্রেশনে মাতলেন ভিনিশিয়াস জুনিয়র, প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ওই এক গোলেই ২০২৬ বিশ্বকাপ নিশ্চিত করলো ব্রাজিল, নয়া কোচ পেলেন পয়লা জয়ের স্বাদ।
কয়দিন আগেই পাঁচ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের হারানো গৌরব ফেরানোর দায়িত্ব ওঠে ফুটবল ময়দানের অভিজ্ঞ জেনারেল কার্লো আনচেলোত্তির কাঁধে। তার ট্যাক্টিক্সে প্রথম ম্যাচে ইকুয়েডরের বিপক্ষে সেলেসাওরা করলো ড্র। বিশ্বকাপ বাছাইয়ের সমীকরণের মারপ্যাঁচ তখন চোখ রাঙাচ্ছে দলটাকে। প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটা গুরুত্বের দিক দিয়ে তাই উঠে গিয়েছিল ওপরের দিকে।
সাও পাওলোতে এদিন ব্রাজিল দলের একাদশে দেখেই বোঝা যাচ্ছিলো মাস্টারমাইন্ড আনচেলত্তি গেমপ্ল্যানে এনেছেন বদল। ইকুয়েরডরের বিপক্ষে সেলেসাওদের স্লো করে দেওয়া রিচার্লিসন ছিলেন না শুরুর একাদশে। সাসপেনশন কাটিয়ে রাফিনিয়া যে ফিরবেন তা ছিল প্রত্যাশিত আর কুনহার অন্তর্ভুক্তিতে মেসেজটা ছিল ক্লিয়ার। গতির ঝড়ে মাঠজুড়ে নড়েচড়ে খেলা কুনহা গোলের চান্স ক্রিয়েট করে দেবেন ভিনিসিয়াস আর রাফিনিয়ার জন্য।
ঘরের মাঠে ম্যাচের শুরু থেকেই দাপট দেখাতে শুরু করে ডন কার্লোর শিষ্যরা। বল পজেশন ধরে রেখে প্রেস করে একের পর এক আক্রমণে প্যারাগুইয়ান ডিফেন্সের দম বন্ধ করে দিচ্ছিল ভিনি-রাফিনিয়ারা। ফার্স্ট হাফে যেন জোগো বোনিতোর ঝলক দেখাতে নেমেছিল আনচেলোত্তির ব্রাজিল। ফল পেতে দেরি হয়নি। ৪৪ মিনিটে স্লাইড করে গোল করেছেন ভিনি জুনিয়র। গুরুর আস্থার প্রতিদান স্বরূপ অ্যাসিস্টটা করেছেন সেই কুনহাই।
এক গোলে এগিয়ে বিরতিতে যাওয়া ব্রাজিল সেকেন্ড হাফে আরো দুর্দান্ত। একের পর এক আক্রমণে দিশেহারা করেছে প্যারাগুয়েকে। ব্রাজিলিয়ানদের দাপটে কালেভদ্রে বল পাচ্ছিল আলফারোর শিষ্যরা। যদিও এদিন ফিনিশিং ভুগিয়েছে সেলেসাওদের। সেকেন্ড হাফের বাকি সময়টায় একের পর এক শট নিলেও গোল যেন অমাবশ্যার চাদ, পাওয়া যায়নি তার দেখা। শেষমেশ গুরু আনচেলত্তির জন্মদিনের রাতে জয় নিয়েই মাঠে ছেড়েছে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। এ জয়টা নতুন কোচের জন্য যেন ছিল বার্থডে গিফট।
কিন্তু নয়া কোচের অধীনে ব্রাজিল যে তাদের নিজেদের ব্র্যান্ড অফ ফুটবল খেলতে শুরু করেছে সেটা এ ম্যাচের পরিসংখ্যানে বেশ পরিষ্কার। ম্যাচের পুরো সময়টায় ৭৩ শতাংশ বল পজেশন ছিল সেলেসাওদের কাছে, প্যারাগুয়ের গোলমুখে ভিনি-মার্তইনেল্লি-রাফিনিয়ারা শট নিয়েছেন ১১ টি।
তবে পরিসংখ্যানের একটা জায়গায় হয়তো আলাদা করে নজর দেবেন নয়া কোচ আনচেলত্তি। ম্যাচজুড়ে ১১ টি কর্নার পেলেও একটিতেও গোল আদায় করতে পারেনি সেলেসাওরা। সেট পিসে গোল মিসের পিএইচডি করতেই যেন এদিন নেমেছিল ব্রাজিল
এত কিছুর পরেও খানিকটা স্বস্তি পেতেই পারে ভিনি-ক্যাসেমিরোরা।
একদিকে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করার তৃপ্তি, অন্যদিকে আঞ্চেলোত্তির অধীনে ছন্দময় ফুটবলের ট্রেলার, ব্রাজিল ফ্যানরা হয়তো আজ নিশ্চিন্তে বলতেই পারেন ‘ইট ইজ আ গুড ডে ইনডিড’